ক্রিকেটারদের আচরণ অপ্রত্যাশিত-অবিশ্বাস্য: পাপন

ক্রিকেটারদের ধর্মঘট নিয়ে মঙ্গলবার বিসিবি কর্মকর্তাদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ক্রিকেটারদের কিছু বলার থাকলে আমাদের কাছে এসে বলবে। কিন্তু মিডিয়ার কাছে কেন। তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, ‘কোন খেলোয়াড় বলতে পারবে তারা দাবি করেছে আর আমরা সেটা দেইনি। তাদের (জাতীয় দলকে) ২৪ কোটি টাকা বোনাস দিয়েছি। টাকার জন্য তারা খেলা বন্ধ করে দেবে বিশ্বাস করছে পারছি না। তাদের আচরণ অপ্রত্যাশিত-অবিশ্বাস্য।’

ক্রিকেটারদের প্রথম দফার দাবি নিয়ে বিসিবি সভাপতি পাপন বলেন, তারা কোয়াবের (ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি-সেক্রেটারির পদত্যাগ দাবি করেছে। কিন্তু এখানে বিসিবির কিছু করার নেই। বিপিএল আগামি আসর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিত্তিক হতে হবে এই দাবি করেছে। এটা আগে থেকেই বলা আছে যে, আগামি আসর ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক হবে। এটা নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।

ক্রিকেটাররা স্টেডিয়ামে তাদের সুযোগ-সুবিধা চেয়ে দাবি তুলেছেন। এর প্রেক্ষিতে বিসিবি কর্তা জানান, চট্টগ্রামে জিমনেশিয়াম দেওয়া হয়েছে। সিলেটে জিমনেশিয়াম করা হয়েছে। এখন আমরা ক্রিকেটের উন্নয়ন করছি। আর এখন তারা নানান দাবি তুলে আন্দোলন করছে। এর আগে তারা কেন এসব নিয়ে কথা বলেনি। তিনি বলেন, আমরা মনে হয় তারা বিদেশি কোচের অধীনে খেলতে চায় না। তারা সম্ভবত দেশীয় কোচ চায়। সেজন্য তারা এমন করছে।

তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে একটা মহলে চক্রান্ত হচ্ছে। তারা প্রথমে ভেবেছিল বিসিবিকে আক্রমণ করে, অন্যান্য পরিচালকদের আক্রমণ করে দেশের বাইরে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে। ভারত সফরে না গেলে আইসিসি থেকে বড় প্রতিক্রিয়া আসবে। যে দাবিগুলো আমাদের কাছে গেলেই তারা পাবে সেগুলো তারা আমাদরে কাছে না এসে, কেন মিডিয়ার কাছে গেল। এটা একটা ষড়যন্ত্র। হয়তো তারা নিজেরাও জানে না। দু’একজন জানতে পারে। তারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে আমি মনে করি।’

পাপন বলেন, তারা একটি জায়গায় সফল হয়েছে। সেটা হলো ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পেরেছে তারা। ক্রিকেটারদের সমস্যা সমাধান নিয়ে তিনি জানান, বিসিবির কাছে কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেয়নি। তাদের তাই অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নেই। ভারত সিরিজের অনুশীলন ক্যাম্প সূচি অনুযায়ী শুরু হবে বলে জানান তিনি। যারা যাবে তারা যাবে। না গেলে নায়। এ নিয়ে বিসিবির কিছুই করাই নেয়। তবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাদের আলাপের পথ খোলা আছে।

এর আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘট ডাকেন। তাদের দাবি পূরণ না হলে সকল ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানান সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহরা। সামনে ভারত সফর। তার আগে অনুশীলন ক্যাম্প। জাতীয় লিগের তৃতীয় বিভাগের ম্যাচ। সব বয়কট করায় পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসেন বিসিবি’র কর্মকর্তারা।

দুপুর ১২টায় ঢাকার মধ্যে থাকা বিসিবি পরিচালকদের নিয়ে এই বৈকঠ বসার কথা ছিল। তবে কিছুটা বিলম্বে শুরু হয় ওই বৈঠক। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট নিয়ে বৈঠকের আগে বোর্ডের দায়িত্বশীল এক পরিচালক বলেন, সামনে ভারত সিরিজ। তার আগে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে বিসিবি’র প্রধান নির্বাহি নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, দ্রুতই তারা ক্রিকেটারদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবেন।

তবে কোন কোন বোর্ড কর্মকর্তা মনে করছেন, ক্রিকেটাররা বোর্ডকে ‘ব্লাকমেইল’ করার চেষ্টা করছেন। ক্রিকেটারদের দাবি যৌক্তিক বলে মনে করছেন তারা। তবে ক্রিকেটারদের আগে বোর্ডের কাছে যাওয়া উচিত ছিল। বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস যেমন বলেন, ‘আমরা জানতামই না ক্রিকেটাররা এত ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। কিন্তু তারা আগে বোর্ডের কাছে না গিয়ে মিডিয়ার কাছে গেছে।’

error

Share this news to your community