বগুড়া নিউজ লাইভ ডটকম: আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল বরাত। এবারও রাতটি যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে পালিত হবে। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় যার যার ঘরে নামাজ পড়তে হবে মুসল্লিদের।
এদিকে, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে শবে বরাতের রাতে বিশেষ দোয়া করার সঙ্গে সঙ্গে কবরস্থান বা মাজারে জনসমাগম না করার জন্য দেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় ৯ এপ্রিল লাইলাতুল বরাত পালনের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
তবে করোনাভাইরাসের কারণে এবার নিজ নিজ বাসায় পবিত্র শবে বরাতের ইবাদত যথাযথ মর্যাদায় আদায় করার জন্য সবাইকে বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এ ছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মসজিদে না গিয়ে বাসায় নামাজ পড়তে বলা হয়েছে।
বছরে পাঁচটি পুণ্যময় রজনীর মধ্যে শবে বরাত অন্যতম একটি। শবে বরাতের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে মুক্তির রজনী। এই রাতকে বলা হয় লাইলাতুল বরাত বা মুক্তির রজনী। নফল ইবাদতের মাধ্যমে মুসল্লিরা এ রাতে আল্লাহর সান্নিধ্য প্রার্থনা করেন।
যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দিনগত রাতে সারাদেশে শবে বরাত পালিত হবে। হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখে দিনগত রাতটিকে মুসলমানরা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করেন।
অনেকের মতে, মহিমান্বিত এ রাতে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। মুসলমানরা এ রাতে মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকিরসহ বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিশ্বে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে।
বিরাজমান এ পরিস্থিতিতে মহিমান্বিত এ রজনীতে নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগির সময় ব্যক্তিগত দোয়া ও প্রার্থনা ছাড়াও করোনা ভাইরাসের মহামারির আক্রমণ থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ববাসীকে সুরক্ষা ও নিরাপদ রাখার বিষয়ে মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া করার জন্য দেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
দেশের শ্রদ্ধেয় আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, মসজিদের সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকসহ সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে এই দোয়া ও প্রার্থনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানায় ইতোপূর্বে লক্ষ্য করা গেছে যে, শবে বরাতে জিয়ারতের জন্য কবরস্থান ও মাজারে অনেক লোকের সমাগম হয়। এছাড়া কবরস্থান ও মাজারের ভিতরে-বাইরে অনেক ভিক্ষুক, অসহায়, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি সাহায্যের জন্য সমবেত হন। এ ধরনের জনসমাগমের কারণে করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমতাবস্থায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শবে বরাতে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে না গিয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করে মৃত আত্মীয়-স্বজনের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
একই সঙ্গে কবরস্থান ও মাজারের গেট বন্ধ রাখাসহ কবরস্থানের ভিতর ও বাইরে কোনো ধরনের জনসমাগম না করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ বিষয়ে গুজব ছড়ানো ও গুজবে বিশ্বাস থেকে বিরত থাকার জন্যও সবাইকে অনুরোধ করেছে।