বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউপি সদস্য কর্তৃক খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ বগুড়ার সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধ্যব কর্মসুচির হতদরিদ্রদের নামে বরাদ্দ দেওয়া সরকারী চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সমাজের হতদরিদ্রদের নামে দেওয়া কার্ড ইউপি সদস্য নিজ হেফাজতে রেখে সহি এবং টিপ জাল করে ২ বছর যাবত চাল তুলে আত্মসাত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত চাল আত্মসাত করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন চাল চোরদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা মুলক কর্মসুচির আওতায় দরিদ্র জন গোষ্ঠীর খাবার নিশ্চিত করার লক্ষে বগুড়ার অন্যান্য উপজেলার ন্যায় বগুড়া সদরেও দরিদ্র মানুষকে খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির আওতা ভুক্ত করা হয়। এসব মানুষদের খাবারের জন্য আপাতকালীন সময়ে ১০ টাকা কেজির দরে মাথাপিছু ৩০ কেজি চাল বিক্রির জন্য ডিলার নিয়োগ করা হয়।
বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কর্তৃক খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজির চাল কার্ডে জাল সহি দিয়ে গত দুই বছর যাবৎ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে প্রায় ৩০ টি কার্ড নিজের কাছে রেখে চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে।
দেশব্যাপী সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী আওয়াধীন বিগত ২০১৬ প্রদত্ত নি¤œবিত্ত মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার জন্য খাদ্যবান্ধব কার্ড তৈরির তালিকা প্রণয়ন করার সময় নুনগোলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার বেলাল হোসেন বিজয় তার ওয়ার্ডে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর সুবিধাভোগীদের ছবি ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি সংগ্রহ করেন। কার্ড তৈরি হওয়ার পর একবার সুবিধাভোগীরা চাল উত্তোলন করার পর সেই কার্ডগুলো ইউপি মেম্বার নিজের কাছে জমা রাখেন।
সম্প্রতি সরকারের কঠোর আইনী ব্যবস্থার চাপে নিজের সংরক্ষণে রাখা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর কার্ডগুলি সুবিধাভোগীদের কাছে ফেরত দেবার পর সুবিধাভোগীরা বুঝতে পারে তাদের নামীয় কার্ডে জাল সহি দিয়ে কয়েক দফায় চাল উত্তোলন করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে কার্ডধারী ব্যক্তিরা জানান, কার্ড তৈরির সময় কাগজপত্র জমা নিয়েছিল। কয়েকমাস পর হঠাৎ গতকাল আমার কার্ডটি ইউপি সদস্য আমার হাতে দিয়ে যায়। কার্ডটি হাতে পেয়ে দেখি পূর্বে এই কার্ডে জাল টিপসহি দিয়ে কয়েক দফা চাল উত্তোলন করা হয়েছে। যা আমি অবগত নই। এ ব্যাপারে বেলাল হোসেন কার্ড নং-১৭১২, রিতা, কার্ড নং-১৬৮৮, শহিদুল কার্ড নং-১৫১৭, আমিনুর, কার্ড নং-১৬১১ একই রকমের অভিযোগ করেন।
সুবিধাভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেম্বার এসে আগেকার কার্ড হাতে দিয়ে বলেন, তোমার একটি ছবি বের করো, ছবি দেওয়ার পর বলে পুরাতন ছবি নাই, আমি বললাম পুরাতন ছবি নাই, তিনি বলেন, উপর থেকে যদি লোক এসে তোমাকে জিজ্ঞেস করে কার্ডের চাল তুমি পাও কি না ? তাহলে বলবে চাল আমি তুলেছি। যদি বলে কার্ড পুরাতন ছবি নতুন কেন? তাহলে বলবে বাচ্চা ছবি ছিড়ে ফেলে দিয়েছে তাই নতুন ছবি লাগানো হয়েছে। কাউকে যেন কিছু বলো না, এই বলে কার্ড হাতে দিয়ে গেল। আমি তো এই কার্ডের চাল একবারও তুলিনি, আমার হাতেও এই কার্ড কোন দিন আসেনি। অথচ কার্ডে দেখা যাচ্ছে ৭ বার ভুয়া সহি দিয়ে চাল উত্তোলন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নুনগোরা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোর বার বার বন্ধ পাওয়া যায়। মোবাইল নং-০১৭১০-৭৯০৮৪১
এ বিষয়ে নুনগোলা ইউপি চেয়ারম্যান আলিম উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বগুড়া সদরের খাদ্য কর্মকর্তা মনিরুল হক জানান, এখনও কোন অভিযোগ পাইনি তবে দু’এক সাংবাদিক টেলিফোন করেছিল এ বিষয়ে জানান জন্য। আমি সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

error

Share this news to your community