বগুড়ায় লবন নিয়ে গুজব ছড়িয়ে সংকটের চেস্টা

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ায় লবন নিয়ে গুজব ছড়িয়ে সংকটের চেস্টা। মঙ্গলবার বগুড়ায় হঠাৎ করে লবন সংকটের গুজব ছড়িয়ে দাম বাড়ানোর চেস্টা চালান হয়। গুজবে লোকজন শহরের বাজার ও পাড়া মহল্লার দোকান গুলোতে লোকজন লবন কেনার জন্য হুমড়ি দিয়ে পড়েন। গুজব চরম আকার ধারণ করায় সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে গুজব হিসাবে উল্লেখ করে মাইকে লোকজনকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানান হয়। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কেউ কেউ কৃত্তিম সংকট সৃস্টির জন্য গুজব ছড়াচ্ছে। লবনের কোন সংকট নেই।
এদিকে বাজার ঘুরে একাধিক সুত্রে জানায়, জামায়াত শিবিরের সঙ্গে জড়িতরা পরিকল্পিতভাবে বাজারে দলবেধে লবন কিনে গুজব ও সংকট সৃস্টির চেস্টা চালায়। তাদের কারণেই গুজবের ডালপালা ছড়ায়। এতে জামায়াতের মহিলা শাখার কর্মীদের বেশ তৎপররতা দেখা গেছে। তাদের পরিকল্পিত গুজবেই অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি লবন কেনা শুরু করেন।
এদিকে গুজব ছড়িয়ে লবণ বিক্রি এবং গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বগুড়া এবং বগুড়ার বিভিন্নথানা এলাকা  থেকে ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী গ্রেফদারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত আদমদীঘিতে ৩টি দোকান ও ১টি গোডাউন সিলগালা করেছে। এছাড়া ১লাখ ৩১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খোজঁ নিয়ে দেখা গেছে হঠাৎ করে দুপুরের পর থেকে লবন সংকটের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে লোকজন লবন কেনার জন্য পাড়া মহল্লার দোকানে গেলে দোকানদাররা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে থাকেন। বিকালের মধ্যে পাড়ামহল্লার মুদি দোকানীরা দোকান বন্ধ করে দেন। লোকজন ছুটে আসেন পাইকারী বাজার ফতেহ আলী ও রাজাবাজারে। তবে বেশির ভাগ দোকানী জানান, লবন শেষ হয়েছে।
ফতেহ আলী বাজারে অবনী স্টোরের মালিক জানান, প্রতিদিন তার ২ বস্তার বেশি লবন বিক্রি হয় না। প্রতি বস্তায় থাকে ২৫ কেজি(এক কেজি ওজনের প্যাকেট)। তবে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তিনি দোকানে থাকা ১০ বস্তা বিক্রি করেন। শহরের রাজাবাজরের ব্যবসায়ী আনোয়ার জানালেন, তিনি বিকাল পর্যন্ত ১২ বস্তা বিক্রি করেছেন। বেশির ভাগ দোকানী কেজি প্রতি প্রায় ৫ টাকা বেশি দরে প্যাকেটজাত লবন বিক্রি করেন। গুজবের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং শুরু করেন। বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সাধারণ ক্রেতা একএক জন ২ থেকে ৫ কেজি কেউবা আবার ১০ কেজি পর্যন্ত লবন কেনে। একাধিক সুত্র জানায়, একটি চক্রের নারী ও পুরুষ একসঙ্গে ইচ্ছানুযায়ি পরিকল্পিত ভাবে লবন কিনে। সুত্র জানায়, জামায়াত শিবিরের কর্মী সহ জামায়াতের মহিলা শাখা লবন সংক্রান্ত গুজব ছড়িয়ে বাজারে দলের পর দল ধরে লবন কিনতে আসায় সাধারণ লোকজন বিভ্রান্ত হয়ে লবণ কেনা শুরু করেন। ওই চক্রটিই লবন নিয়ে নানা গুজব ছড়াতে থাকে বলে সুত্র জানায়। অসাধু ব্যবসায়ীদের এঅবস্থার সুযোগ নিতে দেখা যায়। বিকালের কিছু পর পরেই বেশিরভাগ পাইকারী দোকান এমনকি শহরের বড়গোলা এলাকার লবনের আড়তদার তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
শহরে লবনের পাইকারী দোকান রয়েছে রাজাবাজার ও বড়গোলা এলাকায়। সন্ধ্যায় গিয়ে এসব দোকান বন্ধ দেখা যায়।সন্ধ্যায় পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোকজনকে গুববে কান না দিয়ে বেশি দামে লবন না কেনার আহবান জানিয়ে মাইকে প্রচার করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকে বলা হয়, যথেষ্ঠ পরিমান লবন মজুদ রয়েছে এবং লবনের কোন সংকট নেই বলে লোকজনকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানান। জেলা প্রশাসসক মোঃ ফয়েজ আহাম্মদ জানান, স্যাবোটাজ করে একটি গোষ্ঠি লবন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বলে খবর রয়েছে। তিনি নিজেও বাজার পরিদর্শনে বিকালে বের হন। তবে বাজারে লবনের কোন সংকট নেই বলে তিনি জানিয়ে বলেন, গুজব প্রতিরোধে প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তারা বাজার মনিটরিং করতে মাঠে রয়েছেন।
error

Share this news to your community