বগুড়ায় মরহুম স্বামীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

বগুড়া প্রতিনিধিঃ স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন একজন স্ত্রী। শনিবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের মধুমাঝিড়া গ্রামের মোছাঃ ফিরোজা বেওয়া। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে আমার মরহুম স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি।
তিনি বলেন, আপনাদের অবগত করতে চাই যে, আমার স্বামী পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর মেডিকেল কোরের সৈনিক (নং-৬৮০৪৫৩০) পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। সে সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণে তার ডাকে সাড়া দিয়ে আমার স্বামীসহ ৭ জন সৈনিক তাদের তৎকালীন কর্মস্থল পাকিস্তানের মালির ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে ১১দিন পায়ে হেঁটে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর বিএসএফ’র সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমানীর সাথে সাক্ষাত করলে তিনি তাকে তৎকালীন ১ম ইস্ট বেঙ্গলের কমান্ডিং অফিসার মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম)এর তত্ত্বাবধানে দেন। মেজর হাফিজ আমার স্বামীকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরে মেজর হাফিজের নেতৃত্বে যশোর, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ করেন আমার স্বামী। মেজর হাফিজ এ ব্যাপারে একটি প্রত্যয়নপত্রও প্রদান করেছে তাকে। তা ছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বামীর নাম বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক প্রকাশিত ‘প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা’ খন্ড-৭এ ক্রমিক নং- ২৪৬১ এ লিপিবদ্ধ আছে।
পরে আমার স্বামী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন শয্যাশায়ী থাকার পর ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে …. রাজিউন)। এরফলে আমাকেই আমার স্বামীর নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করার জন্য প্রতিটি কাগজ সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়সহ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে জমা দেই। এতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমান্ডের কমান্ডার/আহ্বায়কগণ সুপারিশ করেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও আমি আমার স্বামীর নাম গেজেটভুক্ত করাতে ব্যর্থ হই। অথচ মুক্তিযুদ্ধর স্বপক্ষের সরকারসহ জননেত্রী শেখ হাসিনার মত মুক্তিযোদ্ধা হিতৈষী প্রধানমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আমার মত একজন মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীকে সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছ্।ে
তিনি বলেন আপনাদের লিখনীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি গোচর করতে চাই আমার মরহুম স্বামীর নাম যথাযথ মর্যাদা সহকারে গেজেটভুক্ত হবে।

error

Share this news to your community