বগুড়ার সান্তাহারে প্লাষ্টিক কারখানায় তালাবদ্ধ রেখে অগ্নিকান্ডে শ্রমিক হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ বগুড়া সান্তাহারে প্লাস্টিক কারখানায় তালাবদ্ধ রেখে-অগ্নিকান্ডে শ্রমিক হত্যাকারী মালিকদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের বিনা খরচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে।
বগুড়া সান্তাহারে প্লাস্টিক কারখানায় তালাবদ্ধ রেখে-অগ্নিকান্ডে শ্রমিক হত্যাকারী মালিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের বিনা খরচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবিতে-বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার বিকেল ৪টায় সাতমাথায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ বগুড়া জেলা আহবায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু। বক্তব্য রাখেন, বাসদ বগুড়া জেলা সদস্যসচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা সভাপতি দিলরুবা নূরী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মঙ্গলবার বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহারে বি আই আর এস নামে প্লাস্টিক কারখানায় ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৫জন শ্রমিক পুড়ে মৃত্যুবরণ করেছে। গনমাধ্যমের সংবাদে আমরা জানতে পারি যে, কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ছিল না, শ্রমিকদের বের হওয়ার একটি গেট তালাবদ্ধ ছিল। নেতৃবৃন্দ বলেন পুঁজিবাদী ভোগবাদী সমাজে মালিকেরা মুনাফার লোভে অন্ধ হয়ে যায়, তারা কারখানা নির্মাণ করতে শ্রম আইনের নিদের্শনা অনুসরণ করে না এবং শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ভাবে না সেই কারণে, তাজরিন, রানা প্লাজা, সেজান জুস কারখানাসহ এই ঘটনাগুলি বারবার ঘটেই চলেছে আর আমাদের সরকারগুলি মালিকী ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মালিকদের সহায়তা করেই চলেছে। এই সমস্ত ঘটনাকে কোনভাবেই শুধুমাত্র দুর্ঘটনা বলা যায় না, কারণ একটি কারখানায় দূর্ঘটনা ঘটলে যে ব্যবস্থাগুলো নেয়া প্রয়োজন তা যদি নেওয়া না হয় এবং দূর্ঘটনা ঘটে, শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। তার মানে তাদেরকে জেনে বুঝে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। তাই এই সমস্ত মৃত্যু হত্যাকান্ডের সামিল। অতীতেও এরকম যতগুলি শ্রমিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে মালিক পক্ষ হয় বিচারের আওতায় আসেনি নতুবা শাসকগোষ্টীর পক্ষ থেকে রক্ষা করা হয়েছে। যার কারণে এই সমস্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। শ্রম আইন প্রয়োগের ব্যর্থতার দরুণ শ্রমিকদের বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তদন্ত কমিটিগুলোকে বরাবর দেখা যায়, তদন্তের নামে মালিক পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করতে। তদন্তের রিপোর্ট দিতে গড়িমসি করতে। এতে করে শ্রমিক স্বার্থ মার খেয়ে যায়। সেই কারণে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নাই। নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান এবং অবিলম্বে সান্তাহারে প্লাস্টিক কারখানায় তালাবদ্ধ রেখে-অগ্নিকান্ডে শ্রমিক হত্যাকারী মালিকদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে বিচার আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের বিনা খরচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

error

Share this news to your community