প্রাণের চকলেটে মিলল মলমূত্রের পোকা!

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ ‘চকলেট’ খেতে কে না ভালোবাসে। ছোট-বড় সকলের প্রিয় এই চকলেট। যদি তা হয় দেশের নামিদামি ও শীর্ষস্থানীয় কোম্পানী প্রাণ গ্রুপের তাহলে তো কোনো কথাই নেই। চকলেটসহ এই কোম্পানীটির বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বিশেষ করে শিশুখাদ্যের ব্যাপারে মানুষের যে আস্থা ও বিশ্বাস তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য যে, এই নামী কোম্পানীর উৎপাদিত শিশু খাদ্য চকলেটের ভেতরে পাওয়া গেছে পোকা। তিন বক্সে থাকা চকলেটের প্রত্যেকটিতে যেসব পোকা দেখা গেছে সেসব পোকা সাধারণত মল-মূত্রে থাকে। চকলেকটির নাম ট্রিট (জৎবধঃ). যদিও চকলেটের মেয়াদকাল প্যাকেটের (বক্স) গায়ে লেখা রয়েছে- ২২-০৫-২২। উৎপাদন ২৩-০৫-২১। নিট ওজন ১৪০ গ্রাম। মূল্য- ১৭৫ টাকা।
খুবই উদ্বেগজনক ও অবাক করা বিষয় হলো- দোকান থেকে ভোক্তার ক্রয় করা তিনটি বক্সে থাকা সব চকলেটেই পোকা পাওয়া গেছে। চকলেটগুলোর মেয়াদ শেষ হতে এখনো ছয় মাস বাকি; তার পরেও কেন এতে মলমূত্রের পোকার উপস্থিতি মিলল তার সঠিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী নগরীর পদ্মা আবাসিকের হযোর মোড় এলাকার ‘মিনিমার্ট ডিপার্টমেণ্টাল স্টোর’ নামের দোকানটিতে পোকাযুক্ত চকলেটের উপস্থিতি পাওয়া যায়। অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দীন নামে একজন ক্রেতা এক বক্স ট্রিট চকলেট ক্রয় করেন। পরে বাসায় গিয়ে বক্স খুলে দেখতে পান বক্সে থাকা প্রতিটি চকলেটের ভেতরে পোকা। এরপর তিনি সেগুলো ওই দোকানে ফেরত নিয়ে যান। এসময় দোকানে থাকা অপর দুটি বক্সের চকলেট বের করলে তার প্রত্যেকটিতেই একই পোকার উপস্থিতি দেখা যায়।
ভোক্তা সাধারণ ও স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে কী প্রাণ কোম্পানী তার উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে ব্যর্থ। এ নিয়ে কোম্পানীটির এক ধরণের শিথিলতা বা উদাসীনতাই প্রতীয়মান হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভোক্তা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, সামান্য চকলেটের ভেতরে পোকার উপস্থিতি প্রমাণ করে প্রাণ কোম্পানীটি উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান আর ধরে রাখতে সমর্থ নয়। এ ব্যাপারে দোষি কোম্পানীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যস্থাগ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
জানতে চাইলে ক্রেতা অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দীন জানান, দেশের নামকরা একটি কোম্পানীর শিশুখাদ্য চকলেটের ভেতর পোকা পাওয়ার ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থাগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
‘মিনিমার্ট ডিপার্টমেণ্টাল স্টোর’র মালিক ইকবাল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় আমার দোকানের সুনাম নষ্ট হয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি এর আইনগত প্রতিকার চাই।
জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাসান আল মারুফ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যিনি ভোক্তা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি প্রমাণ সহ ভোক্তা অধিদফতরে অভিযোগ দিলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাণ কোম্পানীর রাজশাহী অঞ্চলের মার্কেটিং বিভাগের ডিজিএম শাহাদত অপু জানান, এ ব্যাপারে ল্যাবে যারা কাজ করেন তারা ভালো বলতে পারবেন। আর এ ধরণের অভিযোগ আগে কখনো পাইনি। আমরা সেলসের লোক। ল্যাব টেষ্ট করালে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

error

Share this news to your community