নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার স্মারক লিপি প্রদান

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ ৩ মে বেলা সাড়ে ১১ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, পর্যাপ্ত ত্রাণ ও রেশন কার্ড সহ তার সুষম বন্টন, খোদ কৃষকের নিকট থেকে সরকারি রেটে ধান ক্রয় সহ তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলার অন্যতম নেতা, বাসদ বগুড়া জেলার আহবায়ক অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সিপিবি বগুড়া জেলা নেতা সন্তোষ পাল, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলা প্রধান নির্বাহী সমন্বয়কারী আব্দুর রশীদ।
স্মারকলিপির মাধ্যমে জানানো হয়, করোনা ভাইরাস দূর্যোগের কারণে সারাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে, মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। বগুড়াও এর বাইরে নয়। এরই মধ্যে রমজান এসেছে। এই দূর্যোগ ও রমজানে ব্যবসায়ীরা সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। বগুড়া মহাস্থানগড় আড়তে যে সবজি কেজিতে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে সে সবজি বগুড়া বাজারে ৩০, ৪০ টাকায় বিক্রি করছে। বেগুন, পটলের দাম আকাশচুম্বি। অথচ মহাস্থানগড় থেকে বগুড়ার দুরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার যেখানে কেজি প্রতি পণ্য পরিবহন ব্যয় হয় মাত্র ১ টাকা। এ চিত্র শুধু কাঁচা বাজারের ক্ষেত্রে নয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। একদিকে শ্রমজীবী মানুষের ঘরে খাবার নাই, অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস এনেছে।
সেইসাথে গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকা ১লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ শ্রমজীবী মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার কথা উল্লেখ করেন। অন্যদিকে বগুড়ায় ১২ টি পৌরসভায় মোট ৩১ হাজার ৬০০ জন কর্মহীন মানুষকে মে মাস থেকে পরিবার প্রতি এক মাসের জন্য ২০ কেজি চাল ১০ টাকা দরে দেয়া হবে তা জানানো হয়েছে। এই সংখ্যা মোট কর্মহীন মানুষের চার ভাগের এক ভাগেরও কম। এক কথায় বলতে গেলে অপ্রতুল। সেইসঙ্গে ৪/৫ জনের একটি পরিবারে মাত্র ২০ কেজি চাল সেটাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাই পরিবার প্রতি চালের পরিমানও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বগুড়া পৌরসভায় মোট ৯ হাজার ৬০০ জন কর্মহীন মানুষ, ২১টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে মাত্র ২৮৫ জন ১০টাকা কেজিতে চাল ক্রয় করতে পারবেন। প্রয়োজনের তুলনায় এই সংখ্যা কম হওয়ায় কার্ড বিতরণে দলীয়করণের এবং কাউন্সিলরদের নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী ব্যাক্তিদের কার্ড বিতরণের ঘটনা ঘটছে। ফলে অনিয়ম দেখা দিচ্ছে। কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে হলে কর্মহীন হয়ে পড়া সমস্ত মানুষ যাতে ১০টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় করতে পারে তার ব্যবস্থা করা জরুরী।
অন্যদিকে গত ৩০ এপ্রিল খাদ্যমন্ত্রণালয় গত মৌসুমের মত এই বোরো মৌসুমেও ২৬ টাকা কেজিতে অর্থ্যাৎ মণ প্রতি ১০৪০ টাকায় ৮ লক্ষ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা গত মৌসুমে দেখেছি ধানের বাম্পার ফলন হলেও তার মূল্য না পাওয়ায় কৃষক ধানক্ষেতেই আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এবার কৃষি শ্রমিকের ঘাটতির কারণে ধানের উৎপাদন খরচ আরো বেশি পড়ছে। কিন্তু বাজারে ধান ৫০০/৬০০ টাকার বেশি দামে কৃষক বিক্রি করতে পারছে না। করোনা দুর্যোগকালে খাদ্যের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের রক্ষা করার কোন বিকল্প নাই। তাই শুধু ৮ লক্ষ মেট্রিক টন নয়, ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্রাও আরো বৃদ্ধি করতে হবে। সরকার নির্ধারিত দামে কোন ফড়িয়া মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে নয় সরাসরি খোদ কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয় করার দাবি জানানো হয়।

error

Share this news to your community