দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের ১০টাকা কেজি মূল্যের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম, দুপচাঁচিয়া প্রতিনিধিঃ দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্রের ১০টাকা কেজি মূল্যের চাল গত ২০১৬ইং সাল থেকেই ডিলার ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের যোগ সাজসে লোপাট হওয়ার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে বঞ্চিতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৯নং ওয়ার্ডের আলতাফনগর গ্রামের সামাদ মন্ডলের ছেলে হতদরিদ্র এনামুল হক লিখিতভাবে ৩ মে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগে জানা যায়, ওই ওয়ার্ডের দরিদ্রের মাঝে ১০টাকা কেজি মূল্যের তার নামে তালিকা রয়েছে। কিন্তু চাল ডিলার বকুল হোসেন গত ২০১৬ সাল থেকেই আমার নামে বরাদ্দকৃত কার্ড নং-১৪৫৫ এবং আমার এনআইডি নং-১০১৩৩৪০৬৮২৮৩৮ আত্মসাত করে আসছে। একইভাবে ৯নং ওয়ার্ডের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী শেফালী বেগম হতদরিদ্র কার্ড নং-১৩৫৮, এনআইডি নং-১০১৩৩৪০৬৮২৮২৮ গত ২০১৬সাল থেকেই সরকার প্রদত্ত ১০টাকা কেজি মূল্যের কোনো চাউল পায়নি বলে ইউএনও বরাবরে একইদিনে অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও মৌকুড়ি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার নামে হতদরিদ্র কার্ড নং-১৩৫৫ ও ১৪২৫, খিহালী দক্ষিনপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন এর হতদরিদ্র কার্ড নং-১৩৭২, ১৩৮৮ প্রতিজনের দু’টি করে কার্ড রয়েছে। আলতাফনগর বাজারের ১৪২৭নং কার্ডধারী লুৎফর রহমান, ১৪৪৩নং কার্ডধারী দুলাল ও ১৪৬৫ নং কার্ডধারী বুলি বেগম নামে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৩৭৭নং কার্ডধারী ওছিমুদ্দিন অনেক আগেই মারা গেছেন। ১৩৭৫নং কার্ডধারী আবু বক্কর ২০১৬সাল থেকে মাত্র একবার ১০টাকা কেজি মূল্যের চাল উত্তোলন করেছেন এবং ১৩৮৩নং কার্ডধারী খিহালী দক্ষিনপাড়া আনছার আলী প্রবাসে রয়েছেন। কার্ড নং- ৯১৮ ল²ী রানী গণমাধ্যম কর্মীকে ভিডিও স্বাক্ষাতকারের বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট ডিলার তাকে নগদ ২হাজার টাকা ও ২বস্তা চাউল দিয়েছে, অনুরূপভাবে কার্ড নং-১৩৫৮ শেফলী বেগমকে নগদ ২হাজার টাকা দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে এবং কার্ড নং-৯৮৯ মোছাঃ জুলেখা বেগমকেও ২বস্তা চাউল দিয়ে সাদা কাগজে টিপসহি নিয়েছে বলে দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোল্লা মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন। কার্ড নং- ৯৮৭ সাইফুল ইসলাম ৯৮৮ সাহানাজ, ৯৮৯ জোলেখা বেগম, ৯৭৬ মাসুদ রানা, ৫৯২ ধনপতি চন্দ্র রায়, ৬১২ আহম্মদ আলী, হতদরিদ্ররা তাদের নামে বরাদ্দকৃত কার্ডের চাল গত ৫বছরেও পায়নি। এছাড়াও ৯৭৫নং কার্ডধারী খোরশেদ আলী গণমাধ্যম কর্মীকে সাক্ষাতকার দেয়ার পরদিন রাতে ৫বছর ধরে তার নামে বরাদ্দকৃত হতদরিদ্র কার্ডের চাল না পেয়ে মনের দুঃখেই ২৫এপ্রিল দিবাগত রাতে মারা গেছেন। এব্যাপারে ২৭এপ্রিল তার ছেলে রফিকুল ইসলাম তার মৃত পিতার হতদরিদ্র কার্ডের চাল না পাওয়ার বিষয়ে ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ৫৬৪নং কার্ডধারী শ্রীদাম গত ৩বছর যাবৎ রাজশাহী জেলায় টিএমএসএস এ কর্মরত রয়েছেন এবং ৫৪৯নং কার্ডধারী শাহজাহান প্রবাসে রয়েছেন। অপরদিকে কার্ড নং ৫৮৬ জালাল উদ্দিন, ৫৮৭ নজর আলী, ৫৮৮মজিবর রহমান ও কার্ড নং ৫৯৬ আব্দুল হান্নান ধনাঢ্য ব্যক্তি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাজেদুল আলম মুঠোফোনে জানান, হতদরিদ্রদের ১০টাকা কেজি মূল্যের চাল আত্মসাতের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশ পেয়েছি। দু-একদিনের মধ্যেই সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবো।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রাব্বানী বলেন, হতদরিদ্রের ১০টাকা কেজি মূল্যের চাউল আত্মসাতের বিষয়টি জানতে পেরেছি। ইউএনও মহোদয় এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও এসএম জাকির হোসেন জানান, হতদরিদ্রদের নামে বরাদ্দকৃত কার্ডধারীদের চাউল না পাওয়ার অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসার সাজেদুল আলমকে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

error

Share this news to your community