বগুড়া প্রতিনিধিঃ আনন্দ উৎসবের মধ্যদিয়ে বগুড়ার মৃত প্রায় ঐতিহ্যবাহী করতোয়া অনুষ্ঠিত হলো নৌকা বাইচ। করতোয়া নদীর দুষণ রোধে সচেনতা সৃষ্টি লক্ষ্যে বগুড়ার পুলিশ প্রশাসেন উদ্যোগে এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়ার সহযোগিতায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে এসপি ব্রীজ থেকে বেজোড়া ব্রীজ পর্যন্ত পৌনে দুকিলোমিটার এলাকায় করতোয়ার দুধারে হাজার হাজার নারী পুরুষ ও শিশু কিশোর ভিড় জমে যায় নৌকা বাইচ দেখার জন্য। বিকেল ৩টার দিকে ঢাক ডোল বাজিয়ে বর্নিল সাজে জেলা বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাইচের নৌকা গুলো এসপি ব্রীজ এলাকায় পৌছলে উৎসুক জনতার করতালি আর পুলিশের সাজুয়া দলের বাজনায় তাদেরকে স্বাগত জানান হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে নৌকা বাইচের উদ্বোধন, বগুড়ার পুলিশ সুপার মোঃ আলী আশরাফ ভুঞা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা.মকবুল হোসেন, বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জেলা কমিউনিটি পুলিশং কমিটির আহবায়ক মোজাম্মেল হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন, বগুড়া সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, কমিউনিটি পুলিশং বগুড়া জেলা শাখার সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু, বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সিদ্দিকী ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক প্রমূখ। বগুড়া শহরের বুকচিরে বয়ে যাওয়া এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী খর¯্রােতা করতোয়ার এখন তার ঐতিহ্য হারিয়ে মৃতপ্রায় করতোয়ায় পরিনত হয়েছে। সেই সঙ্গে অবৈধ দখলদার আর দুষণ সহ নানাবিধ কারণে অনেক ইতিহাসের স্বাক্ষী করতোয়া এখন ক্ষৃণ নালায় পরিণত হয়েছে। তবে নদী রক্ষায় সচেতন উদ্যোগ থেমে নেই। শুক্রবার বিকালে এমনি এক উদ্যোগ নদী পাড়ের লোকজন সহ হাজার হাজার মানুষের মধ্যে নতুন আশার সৃস্টি করে। গ্রাম বাংলার চিরায়িত নৌকা বাইচ উঠে আসে শহরের বুকে করতোয়া নদীতে। যার প্রধান লক্ষ্য করতোয়া নদীকে দুষণ রোধ ও প্রাণের ধারা ফিরিয়ে আনতে মানুষকে সচেতন করে তোলা। নৌকা বাইচ উপলক্ষে দুপুর থেকেই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনস্থল এসপি ব্রীজ এলাকার দু’ পাশ থেকে শুরু করে করতোয়া নদীর দু’ ধারে দীর্ঘ এলাকা জুড়ে উৎসবমুখ মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। নৌকা বাইচ শুরুর আগে বিকালে করতোয়ার অনেক স্থান পরিপূর্ণ হয়ে উঠে উৎসুক মানুষের ভিড়ে। নদীর দু’ পাশ ছাড়াও বাড়ির ছাদেও ছিলো নানা বয়সীদের ভিড়। নৌকা বাইচ দেখতে আসা নারী পুরুষ শিশু থেকে সব বয়সি মানুষের উপস্থিতি করতোয়া নদীর দু’ পাশ হয়ে উঠেছিলো প্রানময় এক মিলন মেলা। নৌকা বাইচে নানা ভাবে সজ্জিত হয়ে বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার ৬টি দল অংশ নেন। দলগুলো হলো- সোনার বাংলা,আল্লাহ ভরসা, নৌরাজ, আমিনুল হক, তিনবন্ধু, পঙ্খীরাজ ও দেগুন। ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রতিযোগীতা শুরু হয়। তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে ঢাক ঢোলের বাজনায় মধ্যে দিয়ে এই প্রতিযোগিতা মোট ৪ টি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। দু’টি করে দলের মধ্যে প্রতিটি প্রতিযোগীতা শেষে চুড়ান্ত পর্যায়ে অংশ নেয় ৩টি দল। পরে বিজয়ী আল্লাহ ভরসা দলকে একটি ষাড় পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া দ্বিতীয় স্থান নৌরাজ ও তৃতীয় স্থান আমিনুল হক দলকে ১টি করে খাসী দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংষ গ্রহনকারীদের শান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়।