দুপচাঁচিয়ার মথুরাপুর দাখিল মাদ্রাসাটি দীর্ঘ ৫২ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয়নি॥ কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাবন

দুপচাঁচিয়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আলতাফ নগর রেল ষ্টেশনের অদুরে মথুরাপুর দাখিল মাদ্রাসাটি দীর্ঘ ৫২ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয়নি। ওই মাদ্রাসার ১৮ জন শিক্ষক কর্মচারী দীর্ঘদিন বিনা বেতনে চাকরী করে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া সরকারী কোন সাহায্য সহযোগিতা মাদ্রাসাটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

জরাজীর্ণতার কারণে বর্ষা মৌশুম অথবা বৃষ্টির সময় ছেলে মেয়ে মাদ্রাসায় আসতে ভয় পায়। এলাকাবাসীর দাবী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার জন্য এতকিছু করছেন আমাদের এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত করে দিলে এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষ আলোর দিকে অগ্রসর হবে।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাসিষ্ট্যান্ড পাবলিক পসিকিউটর (এপিপি) এ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন জানান, ১৯৬৭ সালে মরহুম আবুল কাশেম মাষ্টার এলাকায় ধর্মীয় শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা মানুষজন শিক্ষাদানের জন্য মথুরাপুর গ্রামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমদাদুল হক সহ এলাকার শিক্ষা অনুরাগী অনেক মানুষ মথুরাপুর মাদ্রাসার নামে জমি দান করেন। মাদ্রাসাটি প্রথমে এবতেদায়ী শাখা চালু হয়।

পরবর্তীতে ২০০৬ সালে মাদ্রাসাটি দাখিল পর্যায়ে উন্নিত করা হয়। ২০১১ সালে মাদ্রাসাটি একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। সেই থেকে মাদ্রাসাটি এলাকার মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে পাঠদান করে আসছে। ইতিমধ্যেই মাদ্রাসাটি উপজেলার মধ্যে ফলাফলে ২বার প্রথম হয়েছে। বর্তমানে ফলাফল ভাল। বর্তমানে ৩৮১জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জিল্লুর রহমান জানান, মাদ্রাসার নামে অখন্ড জমি ৭৫ শতক রয়েছে। এছাড়া মাঠ, পুকুর বাগান ও খেলার মাঠের জন্য ২ একর ৮৬ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, এমপিও নীতিমালার সব শর্তই পুরুন করা হয়েছে। কিন্তু গত ২৩ অক্টোর সরকার ৩ হাজার মাদ্রাসা এমপিও ভূক্ত করেছেন। সেই তালিকায় আমাদের মাদ্রাসার নাম নেই। তাই আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা হতাশ হয়ে পড়েছি। তিনি জানান, হয়তো অনেক শিক্ষক কর্মচারীকে বিনা বেতনে চাকরী থেকেই অবসরে যেতে হবে।
মথুরাপুর দাখিল মাদ্রাসা উপজেলার মধ্যে ভাল মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিতি। মাদ্রাসাটিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সন্তোষজনক। পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীও অনেক বেশি। ফলাফল ভাল, তাহলে মাদ্রাসাটি কেন এমপিও ভুক্ত হচ্ছে না প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুর মোহাম্মাদ প্রাং জানান, মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত হওয়া খুবই জরুরী।

এছাড়া দীর্ঘদিনের পুরানো অবকাঠামো অর্থাৎ মাটির ঘর হওয়ার জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি এই মাদ্রাসার জন্য একটি ভবন নির্মান যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেন দেন।
স্থানীয় এমপি নূরুল ইসলাম তালুকদার জানান, মাদ্রাসাটি অতি পুরানো। এলাকাবাসীর দাবীর সঙ্গে আমি একমত মাদ্রাসাটি দ্রুত এমপিও ভূক্ত হোক।

error

Share this news to your community