দিন মজুরের ছেলের মেডিকেলে চান্স অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভবিষ্যত

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরের খানপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম নলবাড়িয়ার দরিদ্র দিনমজুর আহম্মদ আলী। অভাবের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে তার। একদিন রোজগার না করলে বাড়িতে চুলা জ¦লেনা। টাকার অভাবে নিজে লেখাপড়া করতে পারেননি। লেখাপড়া করায়নি বড় মেয়েকেও।

কোনমতে একটি দাখিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত লেখা করিয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। কিন্ত ছোট ছেলে মো. ইব্রাহিমের আবদারের কবলে পড়ে লেখাপড়া করাতে বাধ্য হয়েছিল দিন মজুর আহম্মদ আলী। ভেবেছিল কত দুরেই বা যাবে সে। বড় বোনের মত অষ্টম শ্রেনী বড়জোর এসএসসি পর্যন্ত।

সেই আবদারই এখন কাঁল হয়ে দাড়িয়েছে তার। ছোট ছেলে মেধাবী ছাত্র মো. ইব্রাহিম ২০১৭ সালে ছাতিয়ানী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। ২০১৯ সালে এইচএসসিতেও এ প্লাস পায়। পরে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়।

এ খবর শুনে মো. ইব্রাহিমের বাবা আহম্মদ আলী যতটা খুশি হয়েছেন। তার চেয়েও বেশি হতাশ হয়েছেন। এখন কিভাবে ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাবে সেই চিন্তায়।
এ ব্যাপারে মেধাবী ছাত্র মো. ইব্রাহিম বলেন, আমার এই অবদানের পিছনে আমার বাবা মা অনেক পরিশ্রম করেছেন। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি তাদের কষ্টের দাম রাখতে। আমি ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে বাবা মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চাই।
ইব্রাহিমের বাবা আহম্মদ আলী জানান, শুনেছি মেডিকেলে পড়ার জন্য অনেক টাকা লাগে। এতো টাকা আমি পাব কোথায়। আমার জমি জমাও নেই যা বিক্রি করে তার লেখাপড়ার খরচ জোগার করব। কিন্তু আমার ছেলে যা রেজাল্ট করেছে তাতে যদি সে ডাক্তার না হয় তাহলে কবরে গিয়েও আমি শান্তি পাবনা। তাই আমার ছেলের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য দেশের বিত্তবানদের আহবান জানাই।

error

Share this news to your community