দিনাজপুর ও রংপুরে স্পিরিট পানে তিন দিনে ১৪ জনের মৃত্যু

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম, দিনাজপুর ও রংপুর প্রতিনিধি: ঈদের ছুটির মধ্যে নেশা করতে স্পিরিট পান করে উত্তর জনপদের পাশাপাশি দুই জেলা রংপুর ও দিনাজপুরে তিন দিনে মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।এর মধ্যে রংপুরে গত তিন দিনে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে; দিনাজপুরে কেবল বুধবারই ছয় জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে পুলিশ। রংপুর কোতয়ালি থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বুধবার বলেন, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী,নেশা করার জন্য স্পিরিট পান করে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এর উৎস এবং সরবরাহকারীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক)হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী,এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ানের নুর ইসলাম (৩০) এবং রংপুর সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়নের সরোয়ার হোসেন (৩১) ও মোস্তফা কামালের (৩০) মৃত্যু হয়।
তাদের মধ্যে মোস্তফা ও সরোয়ারকে ইতোমধ্যে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে সদর উপজেলার চন্দনপাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান।
তিনি বলেন, এরা সবাই স্পিরিট পানে অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিলেন।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ ঘিরে একটি চক্র দল শ্যামপুর বাজার এলাকায় মদ ও স্পিরিট পানের আসর বসায়। সেই স্পিরিট পান করে লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাদের রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করেন।এর আগে ঈদের দিন সোমবার রাতে রায়তি সাদুল­াপুরের দুলা মিয়া (৫২), হরিরাম সাহাপুরের লাল মিয়া (৩০), মঙ্গলবার সকালে শানেরহাট খোলাহাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), বিকালে পাহাড়পুরের জাইদুল হক (৩৫) ও পাশের মিঠাপুকুর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের চন্দন কুমার (৩০) একই কারণে মারা যান বলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।
এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুরে বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যারা স্পিরিট পানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, বুধবার ভোরে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনজনের মৃত্যু হয়।এরা হলেন- বিরামপুর পৌর শহরের মাহমুদপুর গ্রামের আব্দুল মতিন (২৭), আজিজুল ইসলাম (৩৩), মহসীন আলী (৩৮), সফিকুল (৪৩), তার স্ত্রী মঞ্জুআরা (৩৮) ও অমৃত (৩৩) ।এ ঘটনায় আরও দুইজনকে অসুস্থ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদী বলেন, মৃত ও অসুস্থরা সবাই রেকটিফায়েড স্পিরিট পান করেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন তারা।
৯৫ শতাংশ ইথাইল অ্যালকোহলের জলীয় দ্রবণকে বলা হয় রেকটিফায়েড স্পিরিট । পানের অযোগ্য করার জন্য রেকটিফায়েড স্পিরিটের সঙ্গে ১০ শতাংশ মিথাইল অ্যালকোহল এবং কিছু রাসায়নিক মেশানো হয়। তখন একে বলে মেথিলেটেড স্পিরিট।ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, অ্যালকোহল জাতীয় কিছু পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। কোথা থেকে তারা সেটা সংগ্রহ করেছিল সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।মৃতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

error

Share this news to your community