চুরি হওয়া নবজাতক মায়ের কোলে ফিরলো ৩৩ ঘন্টা পর, এক নারী গ্রেফতার

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক প্রায় ৩৩
ঘন্টা পর মায়ের কোলে ফিরেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ শহরের লতিফপুর
কলোনীর মধ্যপাড়া এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে। এসময় নবজাতককে চুরির
ঘটনায় সরাসরি জড়িত রেশমা বেগম(৩৫) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
সে নবজাতককে হাসপাতাল থেকে চুরি করেছিলো বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে উদ্ধার হওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নবজাতকটিকে মা নাদিয়া
আকতার নাহিদা ও পিতা সৌরভের নিকট হস্তান্তর করা হয়। বগুড়া মেডিক্যাল কলেজের
পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এএসএমএম সালেহ ভুঁইয়া জানিয়েছেন মা ও
শিশু সম্পুর্ন সুস্থ্য রয়েছেন। নবজাতকটিকে উদ্ধারের পর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
হয়েছে।
বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগে বগুড়ার কাহালু উপজেলার
নলঘরিয়া গ্রামের সৌরভের স্ত্রী নাদিয়া আকতার(১৮) প্রসব বেদনা নিয়ে মঙ্গলবার
রাতে ভর্তি হয়েছিলেন। পরের দিনে দুপুর তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়ার পর
কর্তব্যরত নার্স রোগীর সঙ্গে আসা আত্মীয় ওবেদা বেগমের নিকট নবজাতককে
হস্তান্তর করেন। এরপরেই বোরখাপড়া এক মহিলা তার নিকট থেকে নবজাতককে
কৌশলে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়।মা তার সন্তাননের মুখ দেখার আগেই চুরির
ঘটনা ঘটে। এঘটনায় মামলা দায়ের ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার হাসপাতাল প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন। পুলিশ
জানিয়েছে, গোপন সুত্রে জানতে পারেন, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা
ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের রেশমা বেগমের নিকট একটি নবজাতক রয়েছে।
খবরটি জেনে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছার
আগেই সে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ শহরের লতিফপুর কলোনী মধ্যপাড়া এলাকা থেকে
রেশমার আত্মীয় ফারুকের বাড়ি থেকে রেশমাকে গ্রেফতার ও চুরি হওয়া নবজাতকে
উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। হাসপাতালের পরিচালক রাতেই হাসপাতালে ছুটে
যান। এসময় সেখানে পুলিশ সুপার মোঃ আলী আশরাফ ভুঞ্রা উপস্থিত ছিলেন। পরে
নবজতকের পিতা ও মা’র নিকট নবজাতকে হস্তান্তার করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক
জানিয়েছেন, নবজাতকটি চুরি হওয়ার পরেই তারা বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে
কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগীতা করেন।
নবজাতকটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পরেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। বগুড়ার
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানিয়েছেন, থানায় অভিযোগ দায়েরের পর
দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাতে লতিফপুর কলোনী
থেকে নবজাতককে সুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার ও এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়। নবজাতক
চুরির ঘটনায় কোন মানবপাচার চক্র জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃত রেশমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে
তিনি জানিয়েছেন।

 

error

Share this news to your community