আদমদীঘিতে করোনার মধ্যে পাকছে ধান, বাড়ছে চিন্তা

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম, আদমদীঘি প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘিতে মরণঘাতী করোনার মধ্যে বোরো ফসলের মাঠে যেন বাতাসে দোল খাচ্ছে রোগমুক্ত পাকা ধানের শীষ। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকলেও শ্রমিক সঙ্কটের কারনে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকের দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। তবে কৃষি অফিস বলছে ফসল ঘরে তুলতে শ্রমিক সঙ্কটে পরবেন না কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন মিলে ১২হাজার ৩শ ৫০হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এবার কৃষকরা জিরাশাইল, পারিজা, ব্রিধান, হাইব্রিড-তেজ, এসিআই-১ বলিয়া-২সহ প্রভৃতি জাতের বোরো ধানচাষ করছেন।
কৃষি বিভাগের দাবি, চলতি মৌসুমে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। সারাদেশে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কৃষকরা জমির ক্ষেতের পরিচর্যার কোনো কমতি করছেন না। শেষ সময়েও রোগ-বালাই দমনে অনেক কৃষক মোবাইল ফোনে কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। এবারের বোরো আবাদ তেমন কোন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হয়নি বলে দাবিও তাদের। ফলে আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন।
উপজেলার ধুলাতইর গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দীন, কায়েতপাড়ার শফির উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, রোগবালাইয়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করতে তারা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে পরামর্শ নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে ফলন ভালো হলেও তারা দুশ্চিতায় রয়েছেন শ্রমিক নিয়ে। করোনার কারনে বাহিরের কৃষি শ্রমিকরা যদি আগের মতো আসতে না পারে তাহলে ঘরে ধান তোলা নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হবে তাদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, লক্ষ্যমাত্রার ১২,৩৫০ হেক্টর জমিতে এবার যে পরিমান ফসল উৎপাদন হবে তাতে প্রায় ৫০,২৬৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সরেজমিনে উপজেলার বেশ কিছু মাঠ পরিদর্শন করে বোঝা যায়- চলতি বোরো ফসল রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণমুক্ত রয়েছে। ফলে করোনার প্রাদুর্ভাবে মাঠের ফসলে কোনো প্রভাব পড়েনি। শ্রমিক সংকট লাঘবের বিষয়ে তিনি জানান, ধান কাটতে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হবে। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া আদমদীঘির দিনমজুরাও কৃষি কাজে শ্রম দিবেন এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো থেকে তুলনামূলক ভাবে এবার বেশি শ্রমিক আসবে। তাছাড়া বগুড়ার যেসব উপজেলায় আগাম ধান কাটা শেষ হবে সেসব কৃষি শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় আদমদীঘিতে আসবেন। শ্রমিক সংকট যেন না হয় সেজন্য নীলফামারী ও রংপুর জেলার ২হাজার কৃষি শ্রমিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে সকলের স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে এবং এসব শ্রমিকদের পর্যবেক্ষণ করা হবে।

error

Share this news to your community