সুরের ভূবনে এক উজ্জল নক্ষত্র মোজাহার হোসেন

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম বিনোদন ডেক্সঃ মোজাহার হোসেন একজন মানুষ, একজন শিল্পী। জন্ম ১৯৫০ সালে। বগুড়া জেলার গোকুল ইউনিয়নের রামশহর গ্রাম এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। বাবা প্রখ্যাত সমাজ সেবক, খাঁন সাহেব তছলিম উদ্দিন আহম্মাদ ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত গোকুল তছলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এক ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠ। যার সুনাম ও সুখ্যাতি বহন করছে। গোকুল ইউনিয়নের পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে তেত্রিশ বৎসর চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থেকে সুখ্যাতি অর্জন করেন। তার সমাজ সেবার কার্যক্রমে ব্রিটিশ গর্ভমেন্ট লর্ডওয়াভেল তাঁকে খাঁন সাহেব উপাধি দেন।

পুন্ড্র সভ্যতার পাদপীঠ, বেহুলা লখিনন্দরের স্মৃতি বিজাড়িত রামশহর গ্রাম তার জন্ম বেড়ে উঠা। বাবার প্রতিষ্ঠিত গোকুল তছলিম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু। মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার পাশের পর ভর্তি হন বগুড়া আযিযুল হক কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। কর্মজীবন শুরু করেন সহকারী শিক্ষক, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে অবসরে।

১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগে তখন দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেন। অত্র এলাকার বিখ্যাত পন্ডিত ইসমাইল প্রামানিক ছিলেন সংগীত প্রিয় মানুষ যার অনুপ্রেণায় সংগীত জীবনে প্রবেশ। তার ছোট ভাই মোঃ মাহবুবুর রহমান গানে উৎসাহিত করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে স্বাধীন দেশে শিল্পী হিসেবে সংগীতকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করেন নিষ্ঠার সাথে, অসংখ্য দর্শক ও গুণীজনদের সান্নিধ্যে তার শিল্পজীবন ক্রমশ বিকশিত হতে থাকে।
শিল্পী জীবনঃ মোঃ মোজাহার হোসেন একজন সাধারন শিল্পী। শিল্পী জীবনে ১৯৭৩ ইং সালে রাজশাহী বেতারে অডিশনের মাধ্যমে নিয়মিত জাতীয় শিল্পী হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন। দীর্ঘ ১০ বছর রাজশাহী বেতারে গান গেয়ে শিল্পী হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। পরে সুযোগ পেলেন ঢাকায় স্পেশাল গান করার জন্য ট্রেনস্ক্রিপশন ষ্টুডিও তে। মাহফুজার রহমান মাহফুজের কথায় এ.এইচ.এম রফিক এর সুরে গান রেকর্ড হলো, “আমার আঁধার জীবনে” এরপর তাকে আর থেমে থাকতে হয়নি। উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সুরকার রাজা হোসেন খান এর সুরে গান রেকর্ড হলো। বাণিজ্যিক কার্যক্রমে- “কি হবে আমায় মনে রেখ”, এমনিভাবে আজাদ রহমানের সুরে “আমার বন্ধু লাডুর সুরে এবং মুন্সি ওয়াদুদ এর রেখায়, “আমাকে এখন শত্রু মনে করে।” সুজিও শ্যামের সুরে “ঐ অস্তগামী সূর্যটাকে” এরপর কবির বকুলের কথায় আলী হোসেনের সুরে “কিছু কিছু কথা থাকে বলা যায় না” রফিকুজ্জামানের কথায়, অনুপ ভট্টাচার্যের সুরে “জানি আমার বেদনা নিয়ে যায়না কবিতা লেখা”- এ.কে. আজাদ মিন্টুর সুরে-শামসুদ্দিন হিরার লেখায় “আমি ভালোবাসি তোমাকে।” সুবল দাশের সুরে “মির্জা গালিব আমি নই”। এছাড়া অশোক পাল, নজরুল ইসলাম সহ অনেক সুরকারের স্পেশাল গান বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও ট্রেনস্ক্রিপশন স্টুডিওতে রেকর্ড হয় যা সংরক্ষিত আছে এবং বাংলাদেশের সবকটি বেতার থেকে বাজানো হয়। কমার্শিয়াল সার্ভিস স্টুডিওর রেজিষ্টারে বরেণ্য শিল্প আব্দুল জোব্বারের পর পরের গণনার তালিকায় মো” মোজাহার হোসেনের নাম। বাংলাদেশে টেলিভিশনে তিনি নিয়মিত শিল্পী হিসাবে তালিকাভুক্ত আছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০০০ গান গেয়েছেন।

তাঁর স্ত্রী, তিন পুত্র, দুই কন্যা, তার কনিষ্ঠ ছেলে মাছুদজ্জামান (বিদ্যুত) একজন নিয়মিত বেতার শিল্পী। মো” মোজাহার হোসেন বগুড়া প্রেসক্লাবের সদস্য এবং টিএমএসএসের কনস্যালটেন্ট কালচারাল পদে ভূমিকা রাখছেন এবং মেঠো সুরের “তুমিই গায়ক” এর একজন বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। শিল্পী মোজাহার হোসেন বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় তার গান আরো বেশি বেশি প্রচারের জন্য দাবী জানান।

error

Share this news to your community