শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের জন্য বগুড়ায় মানববন্ধন সমাবেশ

স্টাফরিপোর্টার, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ বাজেটে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, শ্রমজীবী বীমা নিশ্চিত করতে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশহিসাবে বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে আজ-০৪ জুন বৃহস্পতিবার, বেলা সাড়ে ১১ টায়, বগুড়া সাতমাথায় মানববন্ধন সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি শ্রমিক নেতা কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাসদ বগুড়া জেলা আহবায়ক কমরেড এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সহ সভাপতি শ্রমিক নেতা শিব সংকর শিবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেশ চন্দ্র দাস মনো, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান, প্রচার সম্পাদক সানোয়ার বাবু প্রমূখ।

মানববন্ধন-সমাবেশে কমরেড এ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, করোনা ভাইরাস কভিড ১৯ এর সংক্রমণ এবং মৃত্যু সারা বিশ্বকে আতংকিত করে তুলেছে। যদিও সংক্রমণ এবং মৃত্যু একটি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কিন্তু করোনা সংক্রমণ গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকেই বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। করোনা সংক্রমণ অর্থনীতি ও সমাজের সকল ক্ষেত্রকে আক্রান্ত করলেও শ্রমজীবী মানুষের উপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। শ্রমিকরা কাজ না করলে উৎপাদন হবে না আবার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে যা গোটা সমাজকেই বিপদাপন্ন করে তুলতে পারে। সেই বিবেচনায় একান্ত জরুরী বিষয় ছাড়া উৎপাদন এবং বিপণন এর বিভিন্ন খাতগুলো বন্ধ রাখা প্রয়োজন। আবার এই বন্ধ রাখার ফলে সবচেয়ে বিপদে পড়েছে রিকশা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি চালক, নির্মাণ, পরিবহন শ্রমিক, দোকান-কর্মচারী, তাঁত, চাতাল, বিড়ি, জরি, পাদুকা শ্রমিক, কুলি, দিনমজুর, ঠিকা শ্রমিক প্রভৃতি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা। একদিকে জীবিকার প্রয়োজন অন্যদিকে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার বিপুল খরচ এই দুই সংকটে শ্রমিকরা দিশেহারা। ফলে জীবিকার প্রয়োজনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি উপেক্ষা করেও তাঁরা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন করোনার অর্থনৈতিক আক্রমণের ফলে বেকারত্ব ও শ্রমিকের মজুরী কমে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের মত শ্রম ঘন শিল্পের দেশে এর প্রভাব হবে বহুমুখী। সামাজিক অস্থিরতা, বিক্ষোভ, সহিংসতা, অরাজকতা বাড়বে।
সমাপনী বক্তব্যে কমরেড সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ৬ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিকের জীবনের সমস্যাগুলোকে প্রকট করে তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিশেষ করে খাদ্য, ওষুধ এর মূল্যবৃদ্ধি, বাসা ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, সন্তানের শিক্ষার খরচ বৃদ্ধি, শ্রমজীবীদের জীবনে বাড়তি বোঝা বয়ে এনেছে। শ্রমজীবী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলে তা অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করবে। তাই শ্রমজীবী মানুষ এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশের স্বার্থে আমরা মনে করি শ্রমজীবীদের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ প্রয়োজন। তাই আমরা আশা করি আসন্ন ২০২০- ২১ অর্থবছরের বাজেটে শ্রমজীবীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ করে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করবেন এবং যা দেশের অর্থনীতিকেই গতিশীল রাখবে।
সমাবেশে অন্যন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ৬ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিকের জীবনের সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্মারকলিপির মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবরে ৯ দফা দাবি সম্বলিত প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

error

Share this news to your community