মানুষকে রক্ষা করতেই এবারের বাজেট:অর্থমন্ত্রী

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম ডেস্ক: প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এই বাজেট মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য করা হয়েছে। মূলত মানুষকে রক্ষা করাতেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট-উত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রথমত মানুষকে খাবার দিতে হবে। চাকরিহারা মানুষকে চাকরি দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে। বাজেটে আমরা এসব ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছি। এরপর গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করতে রাস্তাঘাট তৈরি করব।

মুস্তফা কামাল আরও বলেন, এ টাকা কোথা থেকে আসছে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে খরচ করব, তারপর আমরা টাকার কথা চিন্তা করব। টাকা কোথা থেকে আসবে সেটা পরে দেখা যাবে। আগে আমরা খরচ করতে চাই, পরে আয় করব।২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি স্বাভাবিক ও গতানুগতিক ধারারও বাজেট নয় মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভাবিক পথে বাজেটি তৈরি করা হয়েছে। তাতে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে বাজেট তৈরি করতে পারিনি। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ দেশি-বিদেশি অর্থনীতিবিদদের মতামতের ভিত্তিতে এই বাজেট তৈরি করা হয়েছে।অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আহরণের বিষয়ে সবাই প্রশ্ন করছেন। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হলো—জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অটোমেশনের যন্ত্রপাতি আনতে শুরু করেছিলাম; অটোমেশন করতে পারলে আমাদের কর আদায়ের টাকা রাখার জায়গা পেতাম না। এ বছর আমরা ৫ লাখ ৬৮ হাজাার কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করছি, এটি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব।

তিনি বলেন, করোনার কারণে হঠাৎ করে অনেক অর্থের দরকার পড়েছে। মানুষকে খাবার, চাকরি ও সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য। সে কারণে এই বাজেট তৈরি করেছি। আগামীতে স্বাস্থ্য খাতের পরে কৃষি খাত প্রাধান্য পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনা সুদে কৃষকদের বীজ সহায়তা দেয়া হবে। সারসহ অনান্য কৃষি পণ্য দিয়ে সহযাগিতা করব। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে অর্থের যোগান দেয়া আছে। অর্থের যথেষ্ট প্রণোদনা দেয়া আছে। নতুন অর্থবছরে প্রস্তাবিত ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি স্বাভাবিক সময়ের বাজেট নয়। তবে তা গতানুগতির ধারার বাজেট নয়। ডাটা ছিল না, তথ্য-উপাত্ত ছিল না। নির্ভর করতে হয়েছে অতীতের ওপর। মানুষ কী স্বপ্ন দেখে, তাদের প্রত্যয়, সেগুলো মূল্যায়ন করেছি। দাতাগোষ্ঠী, ইকোনমিক থিংক ট্যাংক, দেশীয় ও বিদেশি থিংক ট্যাংক, সবার মতামত নিয়ে বাজেট করেছি। স্বাভাবিক পথ ছিল রুদ্ধ, ভিন্নপথে করতে হয়েছে। সে কারণে দেখবেন অসঙ্গতি মনে হতে পারে অনেকের কাছে। কিন্তু এ ছাড়া উপায় ছিল না। বাজেট না থাকলে কীভাবে টাকা নেব? তাই বাজেট করতে হয়েছে।

আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, এবারের বাজেট আমরা স্বাভাবিক নিয়মে করতে পারিনি। অতীত অর্জন ছিল ভিত্তি। ১০ বছরে সারাবিশ্বে সবার ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। গত ৫ বছরে মাথাপিছু আয় সারাবিশ্বে সেরা। ভারত ও চীন সমান ছিল। আমরা এ সব অর্জন বিবেচনায় নিয়েছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার পর সারাবিশ্ব আমাদের নিয়ে কী ভাবছে, তা বিবেচনায় নিয়েছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ- সবার মতামত নিয়ে বাজেট সাজিয়েছি। যেভাবে সাজিয়েছি, মনে করছি, বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো। যেহেতু আইএমএফ বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করব। ভৌত অবকাঠামো তৈরি আছে। তাই ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব বলে মনে করি।এবারের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপি’র ৬ শতাংশ। বাজেটে মোট জিডিপি‘র আকার ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

এবারের বাজেটে এনবিআর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের কর বহির্ভূত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

error

Share this news to your community