ভিন্ন প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা দিবস, নিস্তব্ধ জাতীয় স্মৃতিসৌধ

বগুড়া নিউজ লাইভ ডটকম ডেস্ক:২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি। ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে গ্রেফতারের আগে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ডাকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জাতি। দীর্ঘ নমাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভমের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
এরপর স্বাধীনতার ৪৯ বছর ধরে বাঙালি জাতি সেই শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা ও মমতায় স্মরণ করে আসছে বাংলাদেশের মানুষ। কিন্তু এবারের স্বাধীনতা দিবস এসেছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। তাই স্মৃতিসৌধে সেভাবে মানুষের ঢল নামেনি, ফুল হাতে দেখা মেলেনি এ প্রজন্মের ছোট্ট শিশুটিকেও; যে কিনা যুদ্ধ দেখেনি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায়। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) বাংলাদেশেও মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এ অবস্থায় গণজমায়েতের কথা চিন্তা করে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কারণে এবছর জাতি শ্রদ্ধা জানাতে পারলো না শহীদদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের জন্য গত ১৬ মার্চ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে গত ১৭ মার্চ স্মৃতিসৌধ ধোয়া-মুছা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছিল।
কিন্তু ২১ মার্চ করোনা সংক্রমণ রোধে জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এ কারণে স্মৃতিসৌধের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রতিবছর প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এরপর থেকে সবস্তরের মানুষ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রধান অনুষ্ঠান জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এবছর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনার মহামারির কারণে এ কর্মসূচিটি বাতিল করা হয়েছে।এদিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, সুনশান পরিবেশ বিরাজ করছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে যেখানে মানুষের জন্য হাঁটা পর্যন্ত দায় হয়ে যায় সেখানে এবার জনশূন্য পরিবেশ।
স্মৃতিসৌধের প্রধান প্রবেশপথ তালা দেওয়া ও দ্বিতীয় পথে তিন/চারজন নিরাপত্তাকর্মী বসে ও দাঁড়িয়ে সময় পাড় করছেন। বন্ধ রয়েছে স্মৃতিসৌধের ফোয়ারাও। প্রধান বেদিতে নেই কোনো ফুল। জাতীয় স্মৃতিসৌধের অফিস সহকারী মো. আবুল বাশার বলেন, এখানে স্মৃতিসৌধ স্থাপনের পর এবারই প্রথম যে, কোনো শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়নি। এবার কোনো লোক আসেননি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা স্বাধীনতা দিবসের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে এবার দিবসটির সব কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।

error

Share this news to your community