বগুড়ায় ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যু। । দুই ডাক্তার আটক

স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুডা শহরের শেরপুর রোড ঠনঠনিয়ার ডক্টরস ক্লিনিক ইউনিট-২ এ বৃহস্পতিবার রাতে টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে নয় বছরের মেধাবী শিশু তৌহিদ হাসান ইয়াবাবু মৃত্যু হয়েছে । অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় ইয়াবাবুর মৃত্যু হয়েছে বলে তার স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন ।

ঘটনার পর পরই স্থানীয় লোকজন ওই ক্লিনিক ঘেরাও করে উত্তেজনা করে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাইদুজ্জামান ও অ্যানেসথেশিয়ান ডা. নিতাই চন্দ্র সরকারকে আটক করে।
শিশু ইয়াবাবৃ সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং মাঝিড়া শহীদ ক্যাডেট একাডেমির তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো।

ডা: সাইদুজ্জামানের তত্বাবধানে বিকেলে ঐ ক্লিনিকে টনসিল অপারেশন করানোর জন্য শিশুকে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যায় তার অপারেশন কর হয়। রাতে সাড়ে ১২ টায় শিশুকে অপারেশন থিয়েটার থেকে মৃত অবস্থায় বের করা হলে স্বজনদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে ৮ এপ্রিলে শহরের মালেকা নাসিং হোমে ডা: সাইদুজ্জামান টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে হুমায়রা আক্তার নামে ছয় বছরের আরেক শিশুর মারা যায়।

স্কুল ছাত্র মৃত্যুর অভিযোগে ক্লিনিক ঘেরাও ও বিক্ষোভ

বৃহস্পতিবার রাতে টনসিল অপারেশনের সময় এক তাওহিদ হাসান (১০) নামে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগে একটি বেসরকারী ক্লিনিক ঘেরাও এবং বিক্ষোভ হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ ডা.সাইদুজ্জামান (নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ) ও ডা. নিতাই চন্দ্র সরকার নামে দুই চিকিৎসককে রাতে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে শুক্রবার ছেড়ে দেয়। দুই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঘটনাটি দুর্ঘটনা। অপারেশন পরবর্তী জটিলতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও অপারেশনের কারণে মারা যাওয়া শিশুটির পরিবার সুত্র জানায়, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ফিরোজুল ইসলামের ছেলে শহীদ ক্যাডেট একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী। তাদের গ্রামের বাড়ি সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী ইউনিয়নে। শিশুটি টনসিল জনিত সমস্যায় ভুগছিলো।

বৃহস্পতিবার বিকালে শিশু তাওহিদকে শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ডক্টরস ক্লিনিক-২ নামে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা.সাইদুজ্জামানের তত্বাবধানে অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়। রাত ৮ টার দিকে ওই চিকিৎসক তার অপারেশন করেন।

এর পরেই স্কুল ছাত্র শিশুটির মৃত্যু হয়। তবে বিষয়টি চেপে রাখা হয় বলে সুত্র জানায়। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বিষয়টি প্রকাশ হলে শিশুটির স্বজনরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে আশেপাশের লোকজন ক্লিনিকটি ঘেরাও করে অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসার অভিযোগে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত বারোটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত লোজনকে শান্ত করে এবং অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা.সাইদুজ্জামান ও এ্যানেসথেশিয়ার চিকিৎসক ডা.নিতাই চন্দ্র সরকারকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনেন।

শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে দুই চিকিৎসককে ছেড়ে দেয়া হয়। অপারেশনকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটির এ্যাজমা ছিলো, এজন্য অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় সে মারা যায়। এটিকে তিনি দুর্ঘটনা হিসাবে উল্লেখ করেন। অপর চিকিৎসক ডা. নিতাই জানান, শিশুটির আগে থেকেই শ্বাস কস্ট সহ কিছু সমস্যা ছিলো। অপারেশন শেষে বেডে নেয়ার পর রাত ১০ টার পর সে মারা যায় বলে তার দাবি।

বগুড়া সদর থানার ওসি জানিয়েছেন, জনরোষ থেকে ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের রক্ষার জন্য তারা খবর পেয়ে সেখানে যান এবং দুই চিকিৎসককে রাত ১ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। সকালে শিশুটির পিতা লিখিত ভাবে জানায়, তার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের কোন অভিযোগ নেই। এর পর দুই চিকিৎসককে ছেড়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য এর আগে গত এপ্রিল মাসে একই ধরনের ঘটনায় একই চিকিৎসকের অপারেশনের পর হুমায়ারা নামে এক শিশু মালেকা নাসিং হোম নামে একটি ক্লিনিকে মারা যায়। ওই ঘটনায় সেখানে ভাংচুর হয়েছিলো। সে সময়ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

error

Share this news to your community