বগুড়ার শিবগঞ্জের ময়দানহাটা ইউনিয়নের ডিলার মশিউর রহমান হিরণের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম, শিবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বগুড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭১০কেজি চাল আত্মসাতের অভিযোগে শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের ডিলার মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় এ মামলা করেন।
এটি চাল আত্মসাতে দুদকের প্রথম মামলা। এর আগে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন তার ডিলারশিপ বাতিল করেছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিলার মশিউর রহমান মাস্টাররোলে মোট ৫৩৮ জন ভোক্তার মধ্যে ১৭ জনের নাম ২-৩ বার উল্লেখ করেন। এছাড়া ১৪০ কেজি চাল হিসাবভুক্ত না করেই ৭১০ কেজি চাল আত্মসাৎ করেন। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, আসামি মশিউর রহমানকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য ওই চাল বরাদ্দ ছিল।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের ডিলার মশিউর রহমান ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান এসএম রূপমের বড় ভাই। তিনি হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এপ্রিলের বরাদ্দ উত্তোলন করেন। তিনি ৩ এপ্রিল দাড়িদহ বাজারে বিতরণ করছিলেন।
এ সময় ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে ১৫ বস্তা চাল কালোবাজারির উদ্দেশ্যে পাচারের চেষ্টা করেন। তখন ইউপি সদস্য শাহনাজ বেগম উপজেলা প্রশাসনে খবর দেন। টের পেয়ে ডিলার মশিউর রহমান ওই নারী ইউপি সদস্যকে হেনস্থা করেন। খাদ্য কর্মকর্তা চালগুলো জব্দ করলেও মশিউর রহমানের লোকজন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে শাজাহান নামের একজন স্থানীয় সাংবাদিক মারপিটের শিকার হন।
এদিকে ৬ এপ্রিল খাদ্যবান্ধব চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সংগ্রহ ও নারী ইউপি সদস্য ও সাংবাদিককে মারপিটের ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গেলে গাজী টেলিভিশন (জিটিভি) বগুড়া প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন মিন্টু ও ক্যামেরা পার্সন রাজু আহমেদকে খবর সংগ্রহ করতে বাধা প্রদান করা হয় এবং ক্যামেরা নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
শিবগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল উদ্দিন গত ১১ এপ্রিল থানায় মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে জিডি করেন। পরে বিষয়টি দুদককে অবহিত করা হয়েছিল।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা কমিটির সভাপতি আলমগীর কবির জানান, ডিলার মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোজাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ডিলারের নামে বরাদ্দ দেয়া চালের মধ্যে ৭১০ কেজি চাল বিতরণে দুর্নীতি ও আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। পরে তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে।

error

Share this news to your community