ধুনটে সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে কয়েক হাজার পরিবার

জিল্লুর রহমান, ধুনট প্রতিনিধি, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ বগুড়ার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের মাদারভিটা গ্রামে ইছামতি নদীতে সেতু না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ৪ গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার। গ্রাম গুলো হলো পার ধুনট, ঘুঘরাপাড়া, মাদার ভিটা ও পারুলকান্দি। পারধুনট-ঘুঘরাপাড়া গ্রামের বুক চিরে বহমান ইছামতি নদী।
সরে জমিনে দেখা যায়, মাদার ভিটা গ্রাম ইছামতী নদীর পূর্ব পাশে হওয়ায় নদীতে সেতু না থাকায় দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তি শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে, কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, শিক্ষার্থীতে স্কুলে পাঠ গ্রহনে অসুবিধায় পড়া, অসুস্থ্য ব্যক্তিদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে গ্রামবাসীর। যুগ যুগ ধরে কোন প্রয়োজনে নদীর পশ্চিম পাশে আসতে হলে তাদের কে নদীতে ভিজিয়ে পার হয়ে আসতে হয়। নদীতে কোন বাঁশের সাকো বা নৌকা না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে তাদরকে হাটু পানি পার হয়ে আসা লাগে আবার বর্ষা মৌসুমে তাদেরকে ভিজিয়ে পার হতে হয়। বিশেষ করে মাদার ভিটা গ্রামে শিক্ষার্থীদের নদীর পশ্চিম পাশে স্কুল ও ধুনট সদরের স্কুল কলেজ গুলোতে আসতে চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়। আবার নদীর পশ্চিম রয়েছে পারধুনট ও ঘুঘরাপড়া গ্রাম। ওই ২ গ্রামের মানুষের অধিকাংশই ফসলি জমি রয়েছে নদীর পূর্ব পাশে। নদীতে সেতু না থাকায় ওই ফসলি জমি গুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করতে পারে না তারা আদি যুগের লাঙ্গলে চাষ করে জমিতে ফসল ফলাতে হচ্ছে। আবার উৎপাদিত ফসল ঠিক মতো ঘরে তুলতে পারছে না এবং নদীর পূর্ব পারে মাদার ভিটা গ্রামের এলাকাবাসীরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ফসলের নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ফলে তারা আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন পড়েছে। গত বছরে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে যাতায়াতের সুবিধা সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারি বর্ষনের ফলে ¯্রােতে সাঁকো ভাসিয়ে গেছে। নদী পারাপার হয়ে ৪ গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। দীর্ঘ দিনের এ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে গ্রামবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে বহুবার সেতু নির্মানের দাবী জানিয়ে আসতেছেন।
পার ধুনট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী নাবিলা খাতুন জানান, নদীতে সেতু না থাকায় আমি সময়মত স্কুলে আসতে পারি না। সারা বছরই নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে স্বল্প পানি পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি হলে স্কুলে যাওয়া অসুবিধা হয়ে যায়। নদী পার হয়ে স্কুলে আসা বা যাওয়ার সময় হাত থেকে বই খাতা পানিতে পড়ে ভিজে যায়।
জিমকল ইন্টারন্যাশনাল কেজি স্কুলের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার জানান, নদীর পানিতে ভিজে স্কুলে যাতায়াত করা অনকে অসুবিধা। নদীতে সেতু না থাকায় সময়মত স্কুলে পৌছিতে পারি না। বর্ষার সময় নদী ভরে যাওয়ায় স্কুলের পাঠ গ্রহন থেকে কিছুটা বঞ্চিত হতে হয়।
মাদার ভিটা গ্রামের আবু হানিফ জানান, মাদার ভিটা গ্রামে ইছামতি নদীতে সেতু না থাকায় যুগ যুগ ধরে দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজ যেতে এবং অসুস্থ্য ব্যক্তিদের জরুরী চিকিৎসায় দূভোর্গ পোহাতে হয়। প্রতিনিয়ত নদীতে ভিজে পার হয়ে কাজ করতে হয়। সেতু সা থাকায় ২ পারের মানুষের কষ্টের শেষ নেই। তারা উৎপাদিত ফসল সময় মত ঘরে তুলতে পারে না আবার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত তারা।
কালেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওর্য়াডের সদস্য রফিকুল ইসরাম জানান, এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। তারা সেতু নির্মানের আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন জানান, মাদারভিটা গ্রামে ইছামতি নদীতে সেতু নির্মানের জন্য সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেেেছন। আশা করছি অতি শীঘ্রই সেতু নির্মানের অনুমোন পাবো।

error

Share this news to your community