বগুড়ায় অগ্নিকান্ডে নিহতদের লাশ পরিবারে হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম: বগুড়ার সান্তাহারে প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৫ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় স্বজনদের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়। লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গত রাতেই একজনের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার পকেটে থাকা মোবাইলের সূত্র ধরে তার লাশ শনাক্ত করা হয়। এছাড়া বুধবার বেলা ১১টায় আরো ৪ জনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই লাশগুলো শনাক্তের জন্য পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ধরণের বর্ণনা দিয়েছিলেন, সেই বর্ণনা অনুযায়ী লাশগুলো মিলে গেলে লাশ শনাক্ত করা হয়। ওসি বলেন, আমরা স্বজনদের কাছ থেকে বর্ণনা জানার পর তাদের সামনে লাশগুলো শনাক্তের প্রক্রিয়া করি। সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী স্বজনরা লাশ শনাক্ত করেন। সনাক্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি জানান, একজনের একটা দাঁত ছিলো না, একজনের শরীরের শুধুমাত্র নিচের অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে সহজেই চেনা যায়, অন্য একজনের শরীরের পোশাকের অবশিষ্টাংশ দেখে সনাক্ত করা হয়। যে কারণে ডিএনএ করে লাশ শনাক্তের প্রয়োজন পড়েনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার বেলা পৌঁণে ১২টার দিকে সান্তাহারে বিআইআরএস প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখান থেকে সিয়াম (১৩), শাজাহান (২৪), বিজয় (১৪), বেলাল হোসেন (৪৩) ও আব্দুল খালেক (৩৫) নামে ৫ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, কারখানার ফিনিশিং রিসাইক্লিং মেশিন অতিরিক্ত উত্তপ্তের কারণে বিস্ফোরণ (ব্লাস্ট) হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে, অগ্নিকান্ডের ঘটনা শুনে বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক অগ্নিকান্ডস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালাহউদ্দিন কে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। উল্লেখ্য, কারখানাটিতে দুই শিফটটে ৭২ জন শ্রমিক কর্মচারী কাজ করতেন। প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পাশাপাশি সহকারী শ্রমিক হিসেবে কিশোররাও কাজ করতো এই কারখানায়। ওই কারখানাটি ব্যবসায়ী সোহেল রানা, জিয়াউর হক নাসিম, ইসমাইল হোসেন, এবং সান্তাহার পৌর মেয়র সাবেক বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু এই চারজনের যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হয়ে আসছিলো।

error

Share this news to your community