শিবগঞ্জে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মাছের মেলা

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা জয়পুরহাট মহাসড়কের পার্শ্বে ঐতিহ্যবাহী উথলী হাটে নবান্ন মেলা শতাধিক বছরের অধিক সময় ধরে এই মেলার ঐতিহ্য এখনও লালন করে আসছে এলাকাবাসী।

নবান্ন উৎসব বরণ উপলক্ষ্যে মাছের বাজার ও নতুন বিভিন্ন ধরণের সবজির বাজার অচ্ছেদ্য সম্পর্ক জনশ্রুতি অনুযায়ী ১২৭২ বঙ্গাব্দ আশ্বিন মাসের ২য় সপ্তাহে অবিভক্ত বাংলার কলকাতার লক্ষ্মীবারের সেরেস্তায় নায়েব মহাময় জমিদার বুধসিংহ বোথরাজ এর পুত্র খর্গসিংহ এ মেলার সূচনা করেন।

কালের বিবর্তনে মেলাটি বাংলা সনের ১লা অগ্রাহায়ন মাসে অনুষ্ঠিত হয়। ১ দিনের এই মেলায় দূর-দূরন্ত থেকে এলাকার আত্মীয়-স্বজনের নিকটজনের বাড়ীতে মেলা উপলক্ষ্যে আগমণ করেন। এই মেলায় ১দিন আগে থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ, শীতের আগাম সবজি , রকমারি পণ্য, আঞ্চলিক প্রসিদ্ধ খাবার নিয়ে ভোজন বিলাসী হাটুরুদের চাহিদা মিটাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে ব্যবসায়ীদের আগমণ ঘটে। এলাকাটি হিন্দু অধ্যুসিত এলাকা হলেও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় এই নবান্ন উৎসব জীবন বীণায় ধারণ করে প্রীতি ও প্রেমের সেতু বন্ধনে লালন করেন সাম্প্রদায়িক সাম্প্রীতি। মেলায় ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজনের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ক্রয়-বিক্রয় করা হয়।

এর মধ্যে কাতল ৮’শ থেকে হাজার, রুই ৬’শ থেকে ৭’শ, মৃগেল ৪’শ থেকে ৫’শ, ব্রিগ্রেড ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা বলেন।

এই মেলায় মাছ পিপাসুদের মিলন মেলায় পরিণিত হয়। নওগাঁ কাজল শেখ এ প্রতিবেদক-কে বলেন, আমি ৩ কেজি থেকে ১৫ কেজি ওজনের প্রায় ২০ মণ মাছ বিক্রয় করেছি। হাটের ইজারা ওমর ফারুক এ প্রতিবেদক-কে বলেন, এই মাছের মেলায় ১ মিনি ট্রাক মাছের খাজনা মাত্র ১২’শ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে।

এ জন্যই আশেপাশের রংপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগাঁ জেলা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে প্রচুর মাছ আমদানী হয়। মৎস্য ব্যবসায়ীরা উচ্চ মূল্যে বিক্রয়ের আশায় তারা ২/৩ বছরের বড় বড় মাছগুলি এই মাছের মেলায় আমদানী করে থাকে। ১ দিনের এ মেলায় ২ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ীরা প্রায় দেড় কোটির অধিক টাকার মাছ ক্রয়-বিক্রয় করে থাকেন।

error

Share this news to your community