লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড : বরগুনায় ৯ লাশ শনাক্ত, বাকিরা গণকবরে

বরগুনা প্রতিনিধি, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকমঃ ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মৃতদের মধ্যে যে ৩৩ জনের লাশ বরগুনায় পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে নয়জনকে শনাক্ত করেছে পরিবার। বাকি লাশগুলো গণকবর দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

শুক্রবার গভীর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল হতাহতের ঘটনা ঘটে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জালাল উদ্দীনের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ৩৩টি মৃতদেহ বরগুনা সদর হাসপাতালে আনা হয়।

বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, “শনিবার বেলা ১২টার দিকে লাশগুলো সার্কিট হাউজ মাঠে নেওয়া হয়।পরে জানাজা শেষে গণকবরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৩৩ লাশের মধ্যে নয়জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পরিবার। বাকি লাশগুলো পর্যায়ক্রমে দাফন করা হচ্ছে। নয়জনের লাশ হস্তান্তরের সময় তাদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।”

শনাক্ত নয়জনের মধ্যে তিনজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- বরগুনা সদরের আমতলী নিমতলী এলাকার জাহানারা ও বরগুনা সদরের লেমুয়া খাজুরা এলাকার যমজ দুই বোন লামিয়া ও সামিয়া।

জেলা প্রশাসক বলেন, “লাশগুলো বেশিরভাগ পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় চিনতে পারছেন না স্বজনরা। মৃতদেহের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা সদরঘাট থেকে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে রওনা হয়েছিল এমভি অভিযান-১০। চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাট পেরিয়ে লঞ্চটি যাচ্ছিল বেতাগী, শেষ গন্তব্য ছিল বরগুনা; শীতের রাতে যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন ঘুমে।

রাত ৩টার দিকে কোনো এক সময় চলন্ত লঞ্চে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই অবস্থাতেই এগিয়ে যেতে থাকে অভিযান-১০, এক পর্যায়ে পুরো লঞ্চ পরিণত হয় অগ্নিকুণ্ডে।

প্রাণ বাজি রেখে সেই ঝাঁপ অনেককে বাঁচিয়ে দিয়েছে। এগিয়ে গিয়ে তাদের তুলে এনেছেন স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডও অংশ নিয়েছে উদ্ধার অভিযানে।

কিন্তু উপরের দুই তলার বন্ধ কেবিনে যারা ঘুমাচ্ছিলেন, তাদের অনেকের আর বের হওয়ার সুযোগ হয়নি। সেই আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের সময় লেগেছে প্রায় তিন ঘণ্টা।

শুক্রবার দিনভর তল্লাশি চালিয়ে পোড়া লঞ্চ আর নদী থেকে ৩৬ জনের লাশ উদ্ধার করার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় দগ্ধ এক শিশুর। আর ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের।

error

Share this news to your community