স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম:বগুড়ায় ভাড়ার দাবিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন মুন্নজান ছাত্রীনিবাসে ১৩ জন ছাত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে খবরপেয়ে পুলিশ সহ গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সাথে ভাড়া নিয়ে ছাত্রীনিবাসের সুপার হাফিজা বেগমের সাথে বাকবিতন্ডা চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসার পর ছাত্রীরা ছাত্রীনিবাস ত্যাগ করে। ছাত্রীদের অভিযোগ গরমের সময় প্রায় ১০/১২টি করে সাপ নিচতলায় দেখা যায়। কর্তপক্ষকে বললেও এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয় না। শুধু ভাড়াটায় তাদের কাছে মুখ্য। ছাত্রীনিবাসের চুরি হয়েছে। চুরি ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তা কোথায়। অথচ ওই হোস্টেলে তিন শতাধিক ছাত্রী ভাড়া থেকে বগুড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে।ওই ছাত্রীনিবাসের ছাত্রী সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের ছাত্রী বগুড়ার শিবগঞ্জের মোছাঃ রুমা জানান, আজ ওই হোস্টেলে সে সহ ১৩জন ছাত্রী আসে। সে তার রুমে গিয়ে দেখে সমস্ত রুম তছনছ অবস্থা। তার জামা কাপড় সহ দামী জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। তার মত আরেক জনের রুমও চুরি হয়ে যায়। যেখানে রুমে চুরি হয়। সেখানে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়। তারপরেও হোস্টেলের ইনচার্জ তিন মাসের ভাড়া পরিশোধ করে তারপর হোস্টেল ত্যাগ করার কথা বলে।সিরাজগঞ্জ জেলার দীপান্বিতা এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। সে জানায়, করোনার কারণে বাড়িতে চলে যায়। আজ হোস্টেলে তার বই পত্র নিতে আসে। কিন্তু তিন মাসের ভাড়া ছাড়া তাকে হোস্টেল থেকে বের হতে বাধা সৃষ্টি করা হয়। তিনি আরও জানান, গরমের সময় প্রায়ই নিচতলায় অনেকগুলো সাপ বের হয়। হোস্টেলের সবাই আতঙ্কে থাকে।সরকারি আজিজুল হক কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী সিরাজগঞ্জের রিফাত জাহান জানান, তিন মাসের ভাড়া ছাড়া হোস্টেল থেকে বের হতে বাধা সৃষ্টি করেছে হোস্টেল সুপার। ভ্যানিটি ব্যাগ পর্যন্ত তল্লাসী করেছে যেন আমরা আমাদের সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে না পারি।হোস্টেল গেটে ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষামান অভিভাবক আদমদীঘির রোজিনা বেগম জানান, মেয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হলে এখান থেকে যেতে দিচ্ছে না। তাই ব্যাগ নিয়ে বসে আছি। টাকা নিয়ে আসি নি। টাকা ছাড়া হোস্টেল থেকে বের হতে দিবে না। তিনি আরও জানান, প্রতিটি ছাত্রীর কাছ থেকে একমাসের অগ্রিম ভাড়া মালিকপক্ষের কাছে জমা রয়েছে।মুন্নুজান ছাত্রীনিবাসের হোস্টেল সুপার হাফিজা বেগম জানান, এপ্রিল থেকে তিন মাসের ভাড়া চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা দিবে না। পরে মালিক আব্দুল্লাহেল কাফীর সাথে কথা বললে দুই মাসের ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের ছেড়ে দিতে বলেন। সাপের উপদ্রবের বিষয়ে তিনি বলেন, মাঝেমাঝে সাপ বের হয়। তবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করি। রুমে চুরি হওয়ার এবং নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।বগুড়া শহরের স্টেডিয়াম ফাড়ির সাব ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর আলম জানান, মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। যার টাকা আছে সে দিয়ে যাবে। আর যার নাই সে পরে এসে দিবে। তবে টাকার জন্য কোন ছাত্রীকে আটকে রাখতে পারবে না কর্তপক্ষ। ছাত্রীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাত্রীনিবাস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যদি তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয় কোন ছাত্রী তবে ওই ছাত্রীনিবাস কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।