বগুড়ার সোনাতলায় এক শিশু শিকলে বাঁধা জীবন

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম, সোনাতলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলার গোসাইবাড়ি গ্রামে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পারভেজ মিয়া (১২) নামে এক শিশুর জীবন চলছে। মানসিক প্রতিবন্ধী সন্দেহে বাবা-মা গত দুই বছর ধরে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন।
অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় এ অবস্থায় তার খাওয়া-দাওয়া ও প্রত্যাহিক সব কাজ চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের গোসাইবাড়ি গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও পারভিন বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় পারভেজ মিয়া। গত দুই বছর আগে তার জ্বর হয়। এরপর থেকে শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।
অন্য শিশুদের মারধর করে। নিজের বাড়ি ছাড়াও প্রতিবেশীদের বাড়িঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর করে। সে মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে হারিয়ে যায়। তাই ওই দম্পতি পারভেজকে শিকলে বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রতিবেশী শাহাদত হোসেন, শামসুল হক মাস্টার মনোয়ার হোসেন প্রমুখ এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
শিশুটির বাবা ও মা জানান, তানজিলা আকতার (১৮), পারভেজ মিয়া (১২) ও হাবিবুল ইসলাম (৫) নামে তাদের তিন সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে পারভেজ মানসিক ও হাবিবুল শারীরিক প্রতিবন্ধী। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
তারা জানান, অস্বাভাবিক আচরণ ও বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়ায় গত দুই বছর ধরে পারভেজকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। প্রথমদিকে পারভেজকে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়া হলেও সুস্থ হয়নি। পরবর্তীকালে টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় জোড়গাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোস্তম আলী মণ্ডল জানান, তার পক্ষে পুরো ইউনিয়নের খোঁজ রাখা সম্ভব নয়। এক বাড়িতে দুই প্রতিবন্ধী শিশু প্রতিবন্ধী থাকার কথা তাকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্য অবহিত করেননি।
সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মিনহাদুজ্জামান লিটন জানান, প্রতিবন্ধী দুই শিশুকে প্রতিবন্ধীর তালিকায় এনে ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।

error

Share this news to your community