“ফলোআপ” গবেষণাগারে পরীক্ষায় খড়ে মাত্রাতিরিক্ত সীসা কারখানা এলাকার খড় দূরে অবাধে বিক্রি আরো ৪টি গরুর মৃত্যু

আজিজুল হক সরকার, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম: ফুলবাড়ী হাট থেকে খড় কিনে গরুকে খাওয়ানোর এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও চারটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই খড় পাকড়ডাঙ্গা ব্যাটারি কারখানা এলাকার।
জানা যায়, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার পূর্ব গৌরীপাড়ার শরিফুল ইসলাম আপেলের একটি গাভিন গরু ও একটি শাহিওয়াল গরু গত শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর),ও শনিবার( ১৮ ডিসেম্বর) ১ দিনের ব্যবধানে মারা যায়। মারা যাওয়ার উপসর্গগুলো ব্যাটারির কারখানা এলাকার প্রায় ৩৫/৪০ টি গরু মারা যাওয়ার মতই । মুখে ফেনা,না খাওয়া, তীব্র ঝাঁকুনি, উন্মাদের মতো ছটফট করতে করতে মারা যায়।
গরুর মালিক আপেল জানান, হাট থেকে খড় কিনে গরুকে খাওয়ানোর পর থেকেই উপরিউক্ত উপসর্গগুলো দেখা দেয়। স্থানীয় পশু হাসপাতালের স্মরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসার পরেও একদিনের ব্যবধানে দেড় লক্ষ টাকার গরু দুটো মারা যায়।
পূর্ব গৌরীপাড়ার দিনমজুর আব্বাস আলীর ৬০/৭০ হাজার টাকার গাভিন গরু গত শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) মারা যায়। গত বুধবার (২২ডিসেম্বর) দুপুরে আরো একটি গরু ১ দিন ভোগান্তির পর চিকিৎসকদের সামনেই মারা যায়।
গরুর মালিক আব্বাস জানান, ফুলবাড়ী বাজার মিল থেকে খড়ের সানি (খড়ের গোখাদ্যবিশেষ) কিনে গরুকে খাওয়ানোর পর থেকেই তার গরু দুটো মুখে ফেনা বের করে ছটফট করতে করতে মারা যায়।
এলাকাবাসীর ধারণা পাকড়ডাঙ্গার ব্যাটারি কারখানা এলাকার সিসাযুক্ত খড় অবাধে চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে।সেই খড় ক্রয়করে গবাদিপশুকে খাওয়ানোই এই সর্বনাশ হচ্ছে।ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এই গরুমৃত্যুকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছে বলেও প্রচার চালাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ঢাকার চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারের কার্যালয় টেকনোলজি এন্ড জুরিসপ্রুডেন্স অনুবিভাগের ডা. রামমোহন অধিকারীর স্বাক্ষরিত রিপোর্ট ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে পৌঁছলে এর বিষক্রিয়ার ব্যাপকতার বিষয়টি জানা যায় ।সে পরীক্ষার রিপোর্টে ওই এলাকার ‘ঘাসে’ পাওয়া গেছে ৩০ হাজার পিপিএম ,‘খড়ে’ পাওয়া গেছে ৩০ হাজার পিপিএম এবং ‘মাটিতে ’পাওয়া গেছে ৫ হাজার পিপিএম।যা প্রাণিদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। প্রসঙ্গত,পিপিএম হচ্ছে, পার্টস পার মিলিয়ন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মো. আহসান হাবিব বলেন, একই কারণে তো সব গরু মারা যায় না। আমরা ১টি গরুর মাথা পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে পাঠাচ্ছি। রিপোর্ট এলেই জানা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ওই এলাকার সিসাযুক্ত খড়গুলো পুড়িয়ে ফেলা হবে এবং বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন জানান,আমি ওই এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলবো। প্রাণিসম্পদ দপ্তরেও কথা বলে এর একটা সুরাহা করবো। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে এবং ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

error

Share this news to your community