ছুটির ক্ষতি পোষাতে শিক্ষায় বাড়তি ৫ হাজার কোটি টাকা

বগুড়া নিউজলাইভ ডটকম ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ছুটির ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিক্ষাখাতে এবারের বাজেটে বাড়তি পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেল সোয়া ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেছেন।

২০২০-২১ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জন্য ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে যা ছিল ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে এবছর ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, গত অর্থবছরে যা ছিল ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা।আর কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা খাতে ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, গত অর্থবছরে ছিল ৭ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।

সংসদে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কৌশলের অংশ হিসেবে গত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে করে দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছুটিকালীন টেলিভিশন ও অনলাইনে দূরশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হয়।

শিক্ষা খাতে আমাদের আগামী অর্থবছরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে এ দীর্ঘ ছুটির ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। এ কাজের জন্য আগামী বছরের বাজেটে আমরা প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান রাখছি।অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা গত বছরের বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছিলাম যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে আমরা শিক্ষা খাতের বিভিন্ন পরিকল্পনা সাজিয়েছিলাম এবং সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষা খাতে সম্পদ সঞ্চালনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমি আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, শিক্ষা খাতে আগামী অর্থবছরেও আমাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

প্রাথমিক শিক্ষায় বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করাই হবে আগামী অর্থবছরে আমাদের এ মূল কৌশল।তিনি বলেন, ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারঅ্যাক্টিভ ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অচিরেই আমরা সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’টি করে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ইন্টারনেট সংযোগ দিতে যাচ্ছি। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য হুইল চেয়ার, ক্রাচ ও হিয়ারিং এইড সরবরাহ করছি। ভবিষ্যতেও এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার উন্নয়ন বেগবান করতে এখন জোর দিচ্ছি শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও উচ্চশিক্ষার গবেষণার ওপর। ২০২০-২১ অর্থবছরে মাধ্যমিকে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ছাত্র, ১০ লাখ ৯৫ হাজার ছাত্রী, উচ্চ মাধ্যমিকে ১ লাখ ১৬ হাজার ছাত্র, ৪ লাখ ৬২ হাজার ছাত্রী এবং ডিগ্রি স্তরে ৫০ হাজার ছাত্র এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ছাত্রীকে উপবৃত্তি দেওয়া হবে। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ১ লাখ ৮৭ হাজার শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি দেওয়া হবে।কারিগরি খাতে দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ তৈরি ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে প্রযুক্তি ও উপযুক্ত স্কিলগুলো চিহ্নিত করা এবং সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত করার কাজ চলমান থাকবে।মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অবকাঠামোর দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় ১ হাজার ৮০০ মাদরাসায় নতুন ভবন করা হচ্ছে এবং ৬৫৩টিতে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

error

Share this news to your community